নভেম্বর ২০, ২০২১
আশাশুনিতে কমে যাচ্ছে খেজুর গাছ : হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর রসের ঐতিহ্য
নুরুল ইসলাম, খাজরা (আশাশুনি) প্রতিনিধি: আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের পল্লীতে দিন যতই যাচ্ছে ততই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা। প্রতি বছর খেজুর গাছের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় খেজুর রসের ঐতিহ্য ইউনিয়ন থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। কমে গেছে গাছিদের সংখ্যাও। খেজুর গাছের পাতা দিয়ে তৈরী পাটি,ঝুপড়া অনেক কাজে ব্যবহার হয় গ্রামাঞ্চলে। শনিবার (২০নভেম্বর) ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়,বছর দশক আগে যে পরিমান খেজুর গাছ ছিল এখন তা অর্ধেকেরও নীচে নেমে এসেছে। শীত মৌসুম শুরুর সাথে সাথে গাছি,খেজুর গাছের মালিক খেজুর গাছ পরিচর্চা করে ব্যস্ত সময় পার করত। গাছের পরিমান বেশি থাকায় এলাকার প্রত্যেক বাড়িতে খেজুর রসে পায়েস,গুড় ইত্যাদি অহরহ পাওয়া যেত। গাছের ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার করার সময় খেজুরের মুছি খাওয়ার জন্য বাচ্ছাদের ভিড় লক্ষ্য করা যেত। খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় এখন গাছির সংখ্যা কমে গেছে। কিছু কিছু বাড়িতে অল্প পরিমান খেজুর গাছ আছে। ফলে খেজুর রসের পায়েস আর ভেজাল মুক্ত খেজুরের গুড় পাওয়া অনেকটা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাছের সংখ্যা কম হওয়ায় গাছিরা এবার খেজুর গাছের প্রাথমিক কাজ গাছ তোলা(স্থানীয় ভাষায়) বাবদ ৮০টাকা থেকে ১শ টাকা করে নিচ্ছে। খাজরা,রাউতাড়া,খালিয়া,কাপসন্ডাসহ আশপাশের এলাকায় বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা খুব কম লক্ষ্য করা যায়। খেজুর গাছ কমে যাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা লবন পানির মৎস্য ঘের হওয়ায় লবন পানির আবহাওয়ায় খেজুর গাছ মরে যাচ্ছে। আবার প্রত্যেক বছর অবৈধভাবে ইটপাজা পোড়ানোর ফলে খেজুর গাছের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমে যাচ্ছে। ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় আবাদী জমি,বাগান ইত্যাদি জায়গায় বাড়িঘর নির্মানের জন্যও খেজুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ নিধন করা হয়। প্রত্যেক বছর যে পরিমান বৃক্ষ নিধন করা হয়, সেই পরিমান বৃক্ষ প্রতি বছর রোপন করতে পারলে আবারও খেজুর রসের ঐতিহ্য ও সবুজ বনানী ফিরে পাবে বলে এলাকাবাসী জানান। এজন্য সচেতন এলাকাবাসী ও সরকারিভাবে এলাকায় খেজুর গাছের চারা রোপন,রক্ষনাবেক্ষন,পরিচর্চা সময়পোযোগী সিদ্ধান্ত বলে স্থানীয়রা মতামত দিয়েছেন। 8,642,280 total views, 7,279 views today |
|
|
|