এপ্রিল ২৩, ২০২০
করোনায় আক্রান্ত ২১৮ পুলিশ সদস্যের সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ
ন্যাশনাল ডেস্ক : জানাজা থেকে শুরু করে মৃতব্যক্তির সৎকার, করোনা আক্রান্ত পলাতক রোগীদের ধরে আনাসহ দেশের এই ক্রান্তিকালে হাজারও কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য জেনে শুনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে পুলিশকে প্রতিটি কাজেই মানুষের খুব কাছে যেতে হচ্ছে। নিজের অজান্তেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত পুলিশ সদর দফতরের দেয়া তথ্য মতে সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কনস্টেবল হতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ২শ’ ১৮ জন সদস্য। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬শ’ ৫২ জন পুলিশ সদস্য। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনার এই সম্মুখ যোদ্ধাদের সুস্থ করে তুলতে পুলিশের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বয়ং পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও। তিনি নিয়মিত আক্রান্ত সদস্যদের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিটের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি করোনায় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত সবাইকে সুস্থ রাখার জন্যও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) জানায়, মানুষের সুরক্ষায় হাসিমুখে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন পুলিশ সদস্যগণ। হচ্ছেন আক্রান্ত ও স্থাপন করছেন অনুকরণীয় মানবিক দৃষ্টান্ত। সূত্র আরও জানায়, বিশ্ব জুড়েই সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশও এই বাস্তবতা থেকে দূরে নয়। দেশের দুই লক্ষাধিক পুলিশ সদস্যের একটি বড় অংশ সরাসরি মাঠে থেকে করোনার বিস্তাররোধে কাজ করছেন। তাদেরকে যথাসম্ভব সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও অনেক চাহিদা রয়েছে। চাহিদা পূরণে কাজ করছে পুলিশ সদর দপ্তর। এছাড়া সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে। যে কোনো সমাবেশ ও লোকসমাগমে আইনি ব্যবস্থা, অপরাধ দমন, আসামি গ্রেফতার ও আদালতে প্রেরণ, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আবশ্যিক খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেয়া, দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, মজুতদারি ও কালোবাজারি রোধ, সরকারি ত্রাণ ও টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, সামাজিক দূরত্ব বাস্তবায়ন, খোলা স্থানে বাজার স্থানান্তর, নিভৃতে সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া, কৃষি ও অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বিভিন্ন স্থানে ধান কাটার শ্রমিক প্রেরণ, অসুস্থ সাধারণ রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া ও চিকিৎসা পেতে সহায়তা করা, প্রিয়জন পরিত্যক্ত ও পথের পাশে পড়ে থাকা মৃত ব্যক্তির পাশে যখন আর কেউ নেই তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও যথাযথ সম্মানের সঙ্গে সৎকার করার মতো হাজারও ইনোভেটিভ কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশের দেশপ্রেমিক সদস্যগণ। ইতোমধ্যেই পুলিশের এই সদস্যগণ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন। পুলিশের এই ত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এগিয়ে আসছেন মানুষের সেবায়। পুলিশ তাদেরকেও সহায়তা করছে মানবিক কাজে। এ সব কাজ করতে গিয়ে পুলিশের সদস্যদের সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য জেনেশুনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন কনস্টেবল হতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ২শ’ ১৮ জন সদস্য। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬শ’ ৫২ জন। 8,570,912 total views, 9,617 views today |
|
|
|