জানুয়ারি ২৮, ২০২০
দলিত জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় সম্পৃক্তকরণে করণীয় শীর্ষক সংলাপ
ডেস্ক রিপোর্ট: সামাজিক জীব হিসাবে মানুষ কখনও একা বসবাস করতে পারে না। সেজন্য প্রয়োজন হয় প্রতিবেশী, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সহযোগিতা। কেননা সহযোগিতা এবং প্রেরণা জোগান একজন ব্যক্তি সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রয়োজন হয় সহায়ক হিসাবে সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গের এবং রাষ্ট্র পরিচালনা কারী গণের। আর যাদের জন্য এই সহযোগিতা বা প্রেরণা জোগান নিতান্তই প্রয়োজন তারা হলেন দলিত শ্রেণির মানুষজন। আর দলিত মানেই সমাজে অস্পৃশ্যতা, নিচু শ্রেণির ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যেমন-ভারত, নেপাল এর মতো বাংলাদেশের কোথাও দলিতদের নির্দিষ্ট সংখ্যার উল্লেখ নেই। তবুও আমাদের দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটি রয়েছে দলিত জনগোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, দলিত জনগোষ্ঠীর অবস্থান কেবল এখানেই শেষ নয়। দেশের মোট জনসংখ্যার ২৫ ভাগ দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে তারা। আর এই ২৫ ভাগের ৬ ভাগই রয়েছে দলিত জনগোষ্ঠী। রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্য ও সামাজিকভাবে অস্পৃশ্যতার শিকার জনগোষ্ঠী হচ্ছে দলিত শ্রেণির মানুষ। যারা কিনা কালক্রমে পেশাচ্যুত, প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতায় এবং পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় পরিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ. এই জনগোষ্ঠীরাই দেশের মোট জনশক্তির একটা বড় অংশ যারা চামড়া, চামড়াজাত দ্রব্য ও বাঁশ-বেতের সনাতন শিল্পী হিসাবে জাতীয় আয়ের সঞ্চালনে অবদান রাখছে, যেটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। এই শিল্পী গোষ্ঠী সরকারী-বে সর কারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের অবদানে আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তাই দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য তাদেরকে বিবেচনা করা আবশ্যক। আমাদের দেশে দলতি সম্প্রদায়কে জনসংখ্যা না ভেবে জনশক্তিতে এবং জনসম্পদে পরিণত করার জন্য এই জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য ১৩ টি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে. আয়োজনকারী সংগঠন কর্র্তৃক ধারণাপত্রে সরকারিভাবে ঋষি এবং হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য খাসজমি বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্যকর আবাসনের ব্যবস্থা করা, সরকারী উদ্যোগে ঋষি ও হরিজন কলোনিগুলোতে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা, প্রা-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা, ঋষি এবং হরিজন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তির নির্দেশনা বলী শিথিল করা, ঝরে পড়া রোধে প্রয়োজনীয় কোচিং এবং শিক্ষা বৃত্তি সকল দলিত শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোটা পরিবর্তন করা, ঋষি ও হরিজন কলোনিতে মাতৃত্বকালীন ভাতা বরাদ্দ করা, কলোনিতে সরকারী পুষ্টি প্রকল্প চালু করা, ঋষি সম্প্রদায়ের চামড়া শিল্পকে আধুনিকায়ণে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রাদি সরবরাহ করা, বিকল্প পেশার সাথে জড়িত হওয়ার জন্য বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, সরকারী চাকুরির ক্ষেত্রে দলিত সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদের জন্য কোটা ব্যবস্থা করাসহ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তনুযায়ী চাকুরি কোটায় ৮০ ভাগ পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বিদেশে প্রেরণের জন্য ৮০ভাগ কোটা বরাদ্দ রাখা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরার চায়না-বাংলা শপিং কমপ্লেক্স এর হলরুমে ব্রট এর সহযোগিতায় শারি ও স্বদেশ সাতক্ষীরার আয়োজনে দলিত জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণে রাষ্ট্রের করণীয় শীর্ষক এক সংলাপ সভায় উপরোক্ত দাবি জানানো হয়। 8,567,697 total views, 6,402 views today |
|
|
|