নভেম্বর ৯, ২০২১
সায়রা খাতুনের ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে অন্য কেউ প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ব্রজপাটুলি গ্রামের জনৈক মহিদুল ও তার করিমন নেছা কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ওয়াজেদ আলী গাজীর স্ত্রী সায়রা খাতুনের ভাতা দীর্ঘ ৫ মাস ধরে অবৈধভাবে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে বঞ্চিত করা হচ্ছে তার আবাসন প্রকল্পের ঘর থেকে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সায়রা খাতুন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিগত ১৩/০২/২০২১খ্রি. তারিখে ব্রেন স্ট্রোকজনিত কারণে আমার স্বামী ওয়াজেদ আলী গাজী মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে আমি খুব অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছি। আমার স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং-১০৮৪, চূড়ান্ত লাল মুক্তিবার্তা নং-০৪০৪০৭০২১৬, সোনালী ব্যাংক লিঃ, কালিগঞ্জ শাখায় ভাতাভোগী হিসাব নম্বর ২৮০৯০০২৩৫১৯৫৫ এবং গওঝ-০১৮৭০০০২৩০১ অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা হিসাব বহি নম্বর-১০৩। আমার স্বামীর সকল হিসাবের ১০০% নমিনী আমি নিজেই। তিনি বলেন, বহুবছর আগে আমার অজ্ঞাতসারে আমার স্বামী ওয়াজেদ গাজী জনৈক করিমন নেছা নামে এক মহিলাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার ঘরে মহিদুল ইসলাম নামে একটি সন্তান রয়েছে। তবে, আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলেও পরবর্তীতে তাকে ডিভোর্সও দিয়েছিলেন। সেই স্ত্রী কখনও আমার স্বামীর বাড়ি ব্রজপাটুলি গ্রামে বসবাস করেনি। কিন্তু আমার স্বামী মৃত্যুর পর পরই ওই ডিভোর্সী স্ত্রী ও তার ছেলে মহিদুল আমার স্বামীর নামে বরাদ্দকৃত মুক্তিযোদ্ধা ভাতার পেতে আমাকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এ ব্যাপারে অমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার পরামর্শক্রমে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে তাদের জানায়। তারপরও তারা আমাকে না জানিয়ে অবৈধভাবে আমার দুই সন্তানসহ আমাকে শতভাগ বঞ্চিত করার জন্য আমার স্বামীর নামে চলমান মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তাদের নামে উত্তোলনের সকল ব্যবস্থা করে নিয়েছে। যার হিসাব নং-করিমন নেছা-২৮০৯২০১০৩৮৩৬৫, সোনালী ব্যাংক লিঃ,কালিগঞ্জ শাখা। আমি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি চলতি বছরে মে মাসের ভাতার টাকা উক্ত করিমন উত্তোলন করেছে এবং অদ্যবধি তার একাউন্টেই ভাতার টাকা জমা হচ্ছে। এদিকে ৯নং মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমার স্বামীর ঠিকানা ভূয়া দেখিয়ে ১৭১ নং স্মারকের গত ১৪/০৩/২০২১ তারিখে অবৈধভাবে ওয়ারেশ কায়েম সার্টিফিকেট নিয়ে ঐ ডিভোর্সী স্ত্রী তার নামে শতভাগ ভাতাভোগী হিসেবে অবৈধভাবে নতুন হিসাব খুলে নেন। তারা আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে তা আত্মসাত করে প্রকৃতপক্ষে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করেছে। রাষ্ট্র যেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানান সেখানে ওই ডিভোর্সী স্ত্রী ও তার ছেলে আমাদেরকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে আমার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকেই অসম্মান করেছে বলে আমি মনে করি। তিনি আরো বলেন, আমি আজ মানবেতর জীবনযাপন করছি কারন আমার স্বামী সোনালী ব্যাংক,কালিগঞ্জ শাখা থেকে দুই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়নি। এছাড়া আহছানিয়া মিশনের এনজিও হতে নেয়া ঋণের পরিমান প্রায় এক লক্ষ টাকা এখনও অপরিশোধিত। তারা বারবার তাগাদা দিচ্ছে কিন্তু ভাতার টাকা না পাওয়ায় তা পরিশোধ করতে পারছি না। এছাড়া অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বামীর নামে আবাসন প্রকল্পের আওতায় একটি পাকা ঘরের বরাদ্দপত্রে আমার স্থলে করিমন নেছার নাম ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেয়া হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গত ১২/০৭/২০২১খ্রি.তারিখে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার উক্ত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে দরখাস্ত দাখিল করিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত ব্যবস্থাপক, সোনালী ব্যাংক লিঃ, কালিগঞ্জ শাখাকে করিমন নেছার অবৈধভাবে খোলা হিসাব নম্বরে লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আতœসাৎকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থাসহ তার প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)। 8,625,753 total views, 5,304 views today |
|
|
|