আগস্ট ১১, ২০২১
দেবহাটায় চাষ হচ্ছে তীন গাছ নতুন সম্ভবনার হাতছানি
মীর খায়রুল আলম, নিজস্ব প্রতিনিধি: পবিত্র কুরআনে বর্ণিত সেই তীন ফলের চাষ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তেমনতি সাতক্ষীরার দেবহাটা এই প্রথম তীন ফলের চাষ শুরু করেছন এক ব্যবসায়ী। যদিও তিনি থাকেন তবুও গ্রামের বাড়িতে ভিন্ন ধরনের ফলের আবাদ শুরু করেছেন এই উদ্যোক্তা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে দেবহাটা উপজেলার চক মোহাম্মাদালীপুর গ্রামের খন্দকর রিয়াসাদ আলীর ছেলে আকবর আলী ২০২১ সালে ময়মনসিংহ থেকে তীন ফলের গাছ এনে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু করেছেন। সরেজমিনে আকবর আলীর খেতে গিয়ে দেখা মেলে সারি সারি তীন গাছের। প্রথমে স্থানীয়রা ধারণা করেছিল মরুভূমির এই গাছ বাংলাদেশের মাটিতে টিকবে না। কিন্তু সবার ধারণাকে তুল প্রমাণিত হয়েছে। ছোট ছোট গাছগুলো ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করেছে। কিছু গাছে ফলও ধরেছে। যা স্থানীয়দের মনে কৌতুহল সৃষ্টি করেছে। দেবহাটা কৃষি অধিদপ্তর ও ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্যে মতে, কুরআনে যে তীনের কথা উল্লেখ রয়েছে। ফাইকাস দলভুক্ত ৮০০ প্রজাতির মধ্যে এই তীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেশীয় কাকডুমুর থেকে বড়। স্বাদে সুমিষ্ট, অত্যধিক সুস্বাদু এবং রসালো। এককথায়, স্বাদে, ঘ্রাণে এবং পুষ্টিগুণে সেরা একটি ফলের নাম তীন। তীন গাছ তিন থেকে দশ মিটার পর্যন্ত বড় হয়। ঘন এবং খসখসে পাতায় ভরপুর থাকে। এছাড়া এই সেই তীন গাছ যার নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরাই নাযিল হয়েছে। এই তীনের নামে মহান আল্লাহ তায়ালা শপথও করেছেন। তাই মুসলমানদের কাছে এই তীন গাছ ও এর ফল একটু ভিন্ন অর্থ বহন করে। কোরআনের ৩০তম পারার ৯৫ নম্বর সূরার প্রথম আয়াত وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ ‘ওয়াত্তীনি ওয়াযাইত‚নি। বর্ণিত সূরায় আল্লাহতায়ালা তীন গাছের নামে শপথ করেছেন। তীনের বাংলা অর্থ আঞ্জীর বা ডুমুর। মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় এ ফলের উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে করা হয়। সৌদি, কুয়েত, মিসরসহ আফগানিস্থান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে। তীনে আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কপার, আইরন ইত্যাদি। এতকিছু উপকারী উপাদান থাকলেও ক্যালরি এবং ফ্যাট নেই বললেই চলে। মোটা হয়ে যাওয়ার চিন্তা ঝেড়ে ফেলে পেটভর্তি খাওয়ার মতো একটি ফল তীন। বড় সাইজের একটি তীনে মাত্র ২ গ্রাম ফ্যাট থাকার কথা খাদ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। ডায়েটেড এবং ফিট থাকতে চাইলে তীন সবচেয়ে কার্যকর ফল। আর এন্টিঅক্সিডেন্ট-এর তীনের চেয়ে ভালো ফল আর নেই বললেই চলে। প্রোস্টেট এবং জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিষেধক হচ্ছে তীন। বøাড প্রেসার এবং স্নায়ুরোগ কমাতে দারুণ কার্যকর। মায়ের বুকে দুধ উৎপাদনে তীনের জুড়ি মেলা ভার। পাইলসে ভোগা ব্যক্তিরা অসাধারণ ঔষধ হিসাবে তীন খেতে পারেন। গরুর দুধে এলার্জি থাকলে তীন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। 8,881,475 total views, 876 views today |
|
|
|