মে ১০, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় মোখার বার্তায় আতংকিত আশাশুনির লক্ষাধিক মানুষ
সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া, দয়ারঘাট, জেলেখালি সহ উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া ও খাজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এরমধ্যে কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ চলছে একেবারেই শম্বুক গতিতে। অপরদিকে সাগর দুয়ারে এসে গেছে ঘূর্ণিঝড় মোচা/মোখা। যে নামেই আসুক ধ্বংস লীলায় সে আইলা, আম্ফানের চেয়ে যে কোন অংশে কম যাবে না সেটা নিশ্চিত করেছেন বিশেষজ্ঞ আবহাওয়াবিদরা। এই প্রচÐ দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবনে এখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। তাই অতীতের মতো বানভাসি হয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতে হাবুডুবুর আশংকায় হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছে নদীতীরের হাজার হাজার মানুষ। ১৯৯৫ সালে খোলপেটুয়া নদীর ৬৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া-দয়ারঘাট গ্রামের মধ্যে বড় খালের সৃষ্টি হয়। এরপর রিং বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি আটকানো হলেও সেই থেকে ২৮ বছর ধরে আর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। মৎস্য ঘের এর সরু বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি আটকানো হচ্ছে। জলোচ্ছ্বাস হলেই এ বাঁধ ভেঙে ইতোপূর্বে আইলা, আম্ফান, বুলবুল, মহাসেন, ইয়াস ঝড়ে কমপক্ষে ৫ বার ভেঙে কয়েক শত মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে শতশত পরিবারকে আর্থিক ভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে। তাই মৎস্য ঘের এর এই ৬৫০ মিটার সরু বেড়িবাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আশাশুনি সদরের শতশত পরিবার। তারা অবিলম্বে এখানে নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও গোলাম রাব্বি হাসান বলেছেন- উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ গুলো মেরামতে কাজ চলছে। অন্যান্য জায়গার মধ্যে আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া, দয়ারঘাট ও জেলেখালি গ্রামে একটু ঝুঁকি আছে। আমরা নিজেরা এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আশা করি ঝড়ের আগেই বাঁধগুলো জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহাগ খানের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, প্রকৌশলী নাজিমুল হক, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ছাইদুর রহমান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম হোসেনুজ্জামান হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রতিনিধি ডা. আব্দুর রহমান, ওসি প্রতিনিধি এস আই জাহাঙ্গীর হোসেন, এ্যাকাডেমিক সুপার হাসানুজ্জামান, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আবুল কালাম মোড়ল, উপজেলা সিপিপি’র সভাপতি আব্দুল জলিল মোড়লসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিও প্রতিনিধি, উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ। পিআইও সোহাগ খান জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সাইক্লোন সেন্টারের পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম খোলা, আশ্রয় কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা এবং কলেজ কেন্দ্রগুলোকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি এসব কেন্দ্রে শুকনা খাবার এবং শিশু খাদ্যসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহন প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 8,568,055 total views, 6,760 views today |
|
|
|