ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামের গৃহবধু অনার্স পড়–য়া কলেজ ছাত্রী শাহীনা রাসুল হাঁসিকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মা ফাতেমা খাতুন বাদি হয়ে জামাতা মাসুদুর রহমান হাসান, নিহতের ননদ স্কুল শিক্ষিকা মুর্শিদা খানম ও নিহতের শাশুড়ি মনোয়ারা খাতুনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ নিহতের স্বামী মাসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
নিহত শাহীনা রাসুল হাঁসি (২০) কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামের মাসুদুর রহমান হাসানের স্ত্রী ও একই উপজেলার চাঁচাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, দুই বছর আগে কালিগঞ্জ উপজেলার চাঁচাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে কালিগঞ্জ রোকেয়া মুনসুর ডিগ্রী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী শাহীনা রাসুল হাঁসির সঙ্গে সোনাতলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোবারক আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে হাসান ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের দাবিতে হাঁসিকে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ হাসান ও তার পরিবারের সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার হাঁসিকে বাপের বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় শুক্রবার সকালে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে লাশের গলায় ওড়না পেচিয়ে গোসলখানার আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেওয়া হয়।
চাঁচাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও বিষ্ণুপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মুর্শিদা খানম জানান, তার বাবা মোবারক আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে দেড় শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহি একটি পুরাতন কালীমন্দির রয়েছে। তার বাড়ির পাশে জমি কিনে নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য ফারজানা আক্তার সেখানে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে এলাকায় সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি নষ্ট হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা বলায় ওই ইউপি সদস্য ও তার স্বামী সাতক্ষীরা ট্রেজারী অফিসের কর্মী শওকত হোসেন ক্ষুন্ন হন। নিহতের পরিবারের পক্ষে ওই ইউপি সদস্য ও তার স্বামী মামলার তদ্বিরকারক হয়ে মৃতের ভাই ফয়সাল আহম্মেদ এর অভিযোগ পরিবর্তণ করে মা ফতেমাকে দিয়ে বাবার নাম পরিবর্তণ করে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। যদিও ইউপি সদস্য ফারজানা খাতুন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হালিমুর রহমান বাবু জানান, কলেজ ছাত্রী শাহীনা রাসুল হাঁসিকে হত্যার অভিযোগে তার মা ফতেমা খাতুন বাদি হয়ে নিহতের স্বামী, ননদ ও শ্বাশুড়িকে আসামী করে ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(খ) ধারায় শুক্রবার থানায় মামলা (১৪নং) দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত মাসুদুর রহমান হাসানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।