আগস্ট ২৫, ২০২০
সরকারি খালে নেট-পাটায় পরিপূর্ণ পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি মৎস্য ও কৃষিতে ক্ষতির আশঙ্কা
মীর খায়রুল আলম : দেবহাটায় সরকারি খাল দখল করে নেট পাটা দিয়ে পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হয়ে নিæঞ্চালের মানুষের মাঝে পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। একই সাথে ফসলি আবাদ ও মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা চরমে। অধিকাংশ খালগুলো দখল করে নেট পাটা দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে দিকে পানির প্রবাহ না থাকায় খালের তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা হারানোর সাথে সাথে গতিহীন হয়ে পড়ায় এলাকা ভিত্তিক ক্রমশ বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ফলে চলমান বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই উপজেলার নিন্মাঞ্চল গুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে স্ব স্ব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সাধারণ মানুষ । সাম্প্রতিক সময়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন কর্তৃক জেলার অভ্যšত্মরীন সকল সরকারি খালের ইজারা বাতিল সহ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তথা খাল গুলোর পানি প্রবাহের ধারা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ নেট-পাটা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত হলেও, দেবহাটার খাল গুলো এখনও রয়ে গেছে অবৈধ দখলদার আর নেট-পাটার কবলে। শুধু তাই নয়, পারুলিয়া-সখিপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সাপমারা খালের বিভিন্ন স্থানে রাতদিন সু-বিশাল নেটজাল পেতে রাখায় সম্প্রতি পুনঃখননকৃত খালটিতে পানির প্রবাহ বাধাগ্র¯ত্ম হচ্ছে। এছাড়া কুলিয়া ইউনিয়নের লাবণ্যবর্তী খালের সাথে সংযুক্ত গরুমারা খাল ও বাধের মুখ নাম স্থানে ইজারার নাম করে খালের মুখে মাটির বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীরা। বছরের পর বছর ইজারাদার চক্রের স্বেচ্ছাচারিতা, জবর দখলকারীদের খাল দখল প্রবণতা ও খালে অজ নেট-পাটা বসিয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে অবৈধভাবে মাছ চাষ করা হলেও তাদেরকে উচ্ছেদে উপজেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বর্তমানে নাব্যতা হারিয়ে অনেকটা শ্বাসরূদ্ধ হয়ে পড়েছে দেবহাটার এসকল খাল গুলো। আবার কুলিয়া বাধের মুখ থেকে লাবণ্যবতীর দুটি শাখা কামটপাড়া সুবর্নাবাদ ও শশাডাঙ্গা হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে। লাবণ্যবতী খালের কামটপাড়া এলাকার খালটির একটি শাখা মুখ ইজারার নামে মাটির বেড়ি-বাধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে ঘেরে পরিণত করেছে স্থানীয় ময়নুদ্দীনের ছেলে ইব্রাহিম। আর লাবণ্যবতীর অন্যান্য শাখা খাল গুলোর মধ্যে সুবর্নাবাদ, টিকেট, পুটিমারী হয়ে প্রবাহিত খালের কয়েক মিটার অšত্মর শত শত অবৈধ নেট-পাটা দিয়ে মাছ চাষের নামে খালের পানি প্রবাহ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্ত করে চলেছে এলাকাগুলোর শতাধিক প্রভাবশালী, সুবিধাবাদীরা। দেবহাটার পারুলিয়া-সখিপুরের সাপমারা খালটি থেকে বেশ কয়েকটি শাখা হলদারখালী, চেংমারী, মাঝেরহাটি হয়ে প্রবাহিত হলেও বর্তমানে অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে ওই শাখা খালগুলো মৎস্য ঘেরে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকার দখলদাররা নেট-পাটা বসিয়ে এবং খাল বন্ধ করে তা অনেকটা মৎস্য ঘেরে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সবশেষে রয়েছে নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চাঁদপুরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত ধাঁপার খাল। খালটি বয়সা, বাবুরাবাদ, ঢেপুখালী, দাইবুড়ি, সন্যাসীতলা, বড়হুলা, কামিনীবসু সহ এলাকা ভিত্তিক একাধিক নামে প্রবাহিত। নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার পানি এই খালটির মাধ্যমে সখিপুরের সাপমারা খালের মধ্যে নিষ্কাশিত হয় যুগ যুগ ধরে। কিন্তু অবৈধ নেট-পাটা, দখলদারিত্ব আর ইজারার নামে মৎস্য ঘের হিসেবে বেশ কিছু প্রভাবশালীর ব্যবহারের কারণে নাব্যতা হারানোর পাশাপাশি বর্তমানে চরমভাবে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে খালটির পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সহ স্বাভাবিক পানি প্রবাহের ধারা। 8,435,551 total views, 8,965 views today |
|
|
|