আগস্ট ১৯, ২০২০
জয়নগর ইউনিয়নে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত
মাজহারুল ইসলাম : কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নে সরকার প্রদত্ত দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়দেব সাহার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ বিষয়ে কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের নজরে আসলে বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজীত সাহার উপর তদন্তভার দেয়া হয়। তারই জের ধরে বুধবার (১৯ আগস্ট) ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া এলাকার সরকারি সুবিধাভোগী নেপাল দাশ ও ফেরদৌসির নামে বরাদ্দকৃত নির্মাণ সম্পন্ন করা ঘর পরিদর্শন পূর্বক তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দজীত সাহা। ভুক্তভোগী নেপাল দাশ জানান, ‘আমার জমিতে ঘর হবে। কোথায় কীভাবে ঘর করলে আমাদের সুবিধা হবে জয়দেব মেম্বার আমাদের সেই সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে যবুথবুভাবে আমাদের সরকারি ঘর নির্মাণ করেছে। ঘর নির্মাণের সময় নি¤œ মানের ইট, বালু ও সীমিত সিমেন্ট দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করলে জয়দেব মেম্বার আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধর করে। সরকার আমাকে যা দিয়েছে আমি সেটুকুই চাই। তিনি আরও জানান, আমার ঘরের এখনও জানালা লাগানো হয়নি অথচ মেম্বার বলছে জানালা দেবে না। বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছে’। এ বিষয়ে জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন আল মাসুদ বাবু জানান, ‘আমার ইউনিয়নে দুইটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলাম। এজন্য ঘর নির্মাণের লক্ষে ইউপি সদস্যদের সমন্বয়ে কর্ম বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। তারপর আমি আড়াই মাসের ছুটি নিয়ে আমেরিকা যাই। কিন্তু আমি দেশে ফিরে আসার দশ দিন পূর্বে আমার অবর্তমানে প্যানেল চেয়ারম্যান (৩নং ইউপি সদস্য) জয়দেব সাহা ইউনিয়ন পরিষদে কোন রেজুলেশন ছাড়াই অবৈধভাবে নতুন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে দশ দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি করে ঘর নির্মাণ করেন’। তিনি আরও জানান, ওই ইউপি সদস্য কর্তৃক ঘর নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি বুঝতে পেরে সাংবাদিকদের দ্বারস্থ হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে বলে (পিআইও) উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুলতানা জাহান নিশ্চিত করেন। কিন্তু দশ দিনের মধ্যে আংশিক কাজ শেষ করে ওই ভুয়া কমিটির স্বাক্ষরে কাজের সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করেন ইউপি সদস্য জয়দেব সাহা। তবে রেজুলেশন ছাড়া নতুন বাস্তবায়ন কমিটি কীভাবে গঠন হয় এবং সেই কমিটির স্বাক্ষরে কীভাবে টাকা উত্তোলন হয় তা আমার বোধগম্য নয়’। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জয়দেব সাহা জানান, ‘নেপালের ঘরের কাজ শেষ হয়ে গেছে তাই কর্তৃপক্ষ আমাকে বিল পরিশোধ করেছেন। যদি কোন কাজ বাকি থাকে তাহলে আমি সেগুলো করে দেবো’। তবে সভা না ডেকে ও রেজুলেশন না করে তিনি কীভাবে বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছেন এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকাকালীন রেজুলেশন করার জন্য সভা আহŸান করা হয়েছিল। সেদিন তিনজন ইউপি সদস্য হাজির হয়ে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করে। পরে আমি অন্য ইউপি সদস্যদের থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিলাম’। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুলতানা জাহান অসুস্থ থাকায় প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বিল পরিশোধ করার বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। এ ঘটনার তদন্ত শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজীত সাহা জানান, ‘কাজে কিছুটা অনিয়ম হয়েছে। তবে আমি এখন বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। কয়েকদিন পরেই তদন্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট শাখায় পেশ করা হবে’। 8,470,862 total views, 2,478 views today |
|
|
|