জুলাই ২৫, ২০২০
দেবহাটায় স্কুল ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় মুক্তিপণ দাবি
দেবহাটা প্রতিনিধি : দেবহাটার আন্দুলপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি গ্রামের বাসিন্দা স্বপন কুমার মিস্ত্রির ৭ম শ্রেণি পড়–য়া কন্যা আবারও অপহরণ হয়েছে। গত ১৯জুলাই রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা। ভিকটিমের পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেবহাটা আন্দুলপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী গ্রামের স্বপন কুমার মিস্ত্রির ৭ম শ্রেণি পড়–য়া কন্যাকে দক্ষিণ ফিংড়ী গ্রামের খান ওহিদুল ইসলামের পুত্র রায়হান খান বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে উত্ত্যক্ত করার জের ধরে ০১/১২/১৯ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভিকটিম বাড়ির সামনে দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় অপহরণকারী রায়হান খান তার সহযোগীদের সহযোগিতায় অপহরণ করে। পর দিন ২/১২/১৯ তাং দুপুরে ভিকটিমকে পারুলিয়া কদবেলতলা মোড় থেকে উদ্ধার করে ভিকটিমের পরিবার। ঐ দিনই ভিকটিমের বাবা স্বপন কুমার মিস্ত্রি বাদী হয়ে ৭/৩০ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় ঘটনা উল্লেখ করে মামালা দায়ের করে। এতে অপহরণকারী রায়হান খানকে প্রধান আসামি করে তার সহযোগী আত্মীয় সদর উপজেলার শিমুলবাড়ীয়া গ্রামের জালাল ঢালীকে ২নং আসামি ও রায়হানের পিতা খান ওহিদুল ইসলামকে ৩নং আসামি করে সদর থানায় মামলা নং-৪ দায়ের করে। ভিকটিম উদ্ধার হওয়ার ৫দিন পরে ৭/১২/১৯ তাং স্কুল থেকে বাড়িতে ফেরার পথে উক্ত আসামিরা পরিকল্পিত ভাবে দুপুর ১টার দিকে শিমুলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে প্রধান আসামির মাতা দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুনের সহযোগিতায় আবারও অপহরণ করে প্রথমে চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়ে যায়। পরে চর বালিথাস্থ রেজাউল ইসলাম খোকন (খোকন দোকানদার) এর বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। পরে ঐ ঘটনায় ভিকটিমের মা অর্পনা রানী মিস্ত্রি সাতক্ষীরা বিজ্ঞ মানব পাচার অপরাধ ট্রাইবুনালে একটি পিটিশন দাখিল করে। যে পিটিশনে পূর্বের তিন জন আসামি বহাল সহ নতুন ভাবে প্রধান আসামির মা চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুন এবং দেবহাটা থানার চর বালিথা গ্রামের রজব আলি সানার পুত্র রেজাউল ইসলাম ওরফে খোকনসহ ৫জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। যার পিটিশন নং-৩৯/২০,ধারা-৬/৭/৮ মানব পাচার অপরাধ দমন আইন ২০১২। ঐ সময় আদালত বিষয়টি পিবিআই তদন্তে স্থানান্তর করে। পরে ভিকটিমকে ইং ১২/০২/২০২০ তারিখ উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে বাগেরহাট সেভ কাস্টরীতে প্রেরণ করা হয়। ২৬/০৫/২০২০ তারিখ ভার্চ্যুয়াল কোর্ট বাগেরহাট থেকে রায় পেয়ে ভিকটিমকে বাড়িতে নিয়ে আসে তার পরিবার। কিন্তু থেমে নেই অপহরণকারীরা। এর জের ধরে গত ১৯জুলাই রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে আবারও অপহরণ করে ভিকটিমকে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য সুকুমার সরদার সহ কয়েক জনের উপস্থিতিতে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী প্রধান আসামি রায়হান খানের পিতা খান ওহিদুল ইসলাম। শুক্রবার সকালের দিকে অপহরণকারী প্রধান আসামির মা দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুনের কাছে এল্লারচর বাজারে কয়েক জনের উপস্থিতিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সামছুর রহমান পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণের বিষয়টি জানতে চাইলে আছিয়া খাতুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সুকুমার সরদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি সহ কয়েক জনের উপস্থিতিতে আসামি রায়হান খানের পিতা খান ওহিদুল ইসলাম পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এদিকে ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সামছুর রহমান জানান, শুক্রবার সকালের দিকে আসামির মা আছিয়া খাতুনের সাথে এল্লারচর বাজারে দেখা হয়। সেখানে কয়েক জনের উপস্থিতিতে তার স্বামী কর্তৃক পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণের সত্যতা স্বীকার করেন আছিয়া। এ বিষয়ে আসামির মা দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার স্বামী এটা ঠাট্টার ছলে বলেছে। তার সাথে রাগারাগি করে আমি আমার ভাইয়ের বাড়িতে চলে এসেছি। 8,960,676 total views, 16,426 views today |
|
|
|