জাহাঙ্গীর আলম লিটন, কলারোয়া প্রতিনিধি : জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুলকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (২৬ জুলাই) দুপুরে চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের পুত্র। আওয়ামী পরিবার সন্তান। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হই। স্বাধীনতার পর সর্ব প্রথম আমিই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হিসেবে চন্দনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচনের পর থেকেই স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল জামায়াত-বিএনপির সাথে আতাঁত করে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি ইউনিয়নে আমার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এপর্যন্ত ওই মহলের পক্ষ প্রায় ১৩৫ টি অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করেছে। এতেও আমাকে আটকাতে না পেরে ওই মহলটি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সামাজিক সুনাম নষ্ট করতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানির চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
সম্প্রতি আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরবর্তীতে আমার করোনা শনাক্ত হয়। ফলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলাম। এদিকে আমার ইউনিয়নের হিজলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক গোলাম কুদ্দুস একজন মানসিক রোগী। সে বছরের অধিকাংশ সময় মস্তিক বিকৃত অবস্থায় থাকে। ইতিপূর্বে মস্তিক বিকৃত অবস্থায় তার স্ত্রী ফিরোজা বেগমকে বেধড়ক মারপিটসহ নানা উৎপাত করায় জেল হাজতে প্রেরণ এবং পরবর্তীতে পাগলা গারদেও পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি গোলাম কুদ্দুস নাকি আবারও মস্তিক বিকৃত হয়ে পড়লে একই এলাকার মৃত. আনার ফকিরের পুত্র মনিরুল ইসলাম ও কামরুল ইসলামের স্ত্রী রাজিয়ার সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে স্থানীয়রা আমাকে অবহিত করলে আমি অসুস্থ থাকায় গত ১৭ জুলাই দুইজন চৌকিদার দিলীপ দাশ ও অশোক দাশকে ঘটনাস্থলে পাঠালে মস্তিক বিকৃত গোলাম কুদ্দুস চৌকিদারদের মারপিট করে তাদের রক্তাক্ত জখম করে। চৌকিদাররা আমাকে কাঁদতে কাঁদতে মোবাইলে বিষয়টি অবহিত করেন। সে সময় চৌকিদাররা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে গোলাম কুদ্দুসকে মৃদু প্রহার করে। চৌকিদাররা কুদ্দুসের হাতে আহত হওয়ায় তাদের চিকিৎসা বাবদ তার পরিবারের পক্ষ থেকে ২ হাজার টাকা প্রদান করে। ঘটনার প্রায় ৩ দিন পর গোলাম কুদ্দুস মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যাকান্ড প্রচার দিয়ে ওই মহলটি আমাকে হত্যা মামলার আসামি করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। অথচ ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকে আমি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলাম। যা কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সকলেই অবগত আছেন। তাহলে ওই ঘটনার সাথে আমি কীভাবে সম্পৃক্ত হলাম। ওই মহলটি আমাকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিশেহারা করার জন্য বিভিন্ন সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে পত্র-পত্রিকায় হয়রানি মূলক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায়। অথচ নিহতের স্ত্রী কলারোয়া থানায় যে মামলা দায়ের করেছে। সেখানে আমাকে আসামি করেনি। প্রকৃতপক্ষে আমার জনপ্রিয়তায় ওই কুচক্রী মহলটি ঈর্ষান্বিত। যে কারণে ওই মহলটি আমাকে তাদের পথের কাটা ভেবে এ ধরনের ন্যাক্কার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে যাতে চন্দনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হতে না পারি সে কারণে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাধা আমাকে দমাতে পারবে না। আমি জনগণের ভালোবাসায় আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে পারব বলে মনে করি। আমাকে শুধু হত্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টা নই আমাকে হত্যার পরিকল্পনাও ওই মহলটি করছে বলে গোপনে অবগত হয়েছি। হিজলডাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র যুবলীগ কর্মী আহাদ একটি ভিডিওতে বলেছে আমি নাকি নিহত পরিবারকে হাসপাতালে যেতে দেইনি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। ওই আহাদের পরিবারের সাথে আমার বিরোধ থাকায় তারা এ ধরনের মিথ্যাচার করেছে। ঘটনার সময় আমি নিজেই গুরুতর অসুস্থ ছিলাম। এছাড়া চৌকিদারদের মারপিটের পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে চৌকিদারদের চিকিৎসার জন্য ২ হাজার টাকা আদায় করে দেন। যাতে চৌকিদাররা থানায় কোন ধরনের অভিযোগ না করে। অথচ উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগ এনে হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুরোধ জানাচ্ছি যদি হত্যা কোন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকি তদন্তপূর্বক প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু মিথ্যা অভিযোগে কোন ভাবেই যেন আমার মত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হয়রানি না করা হয় এবং ওই চক্রান্তের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/