এপ্রিল ১৬, ২০২০
‘নো প্রোফিট, নো লস’ ভিত্তিতে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করবে জেলা প্রশাসন
ডেস্ক রিপোর্ট : করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সাতক্ষীরা জেলায় জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আগামীকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু হবে। NO PROFIT, NO LOSS ভিত্তিতে ২ টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে চাল, ডাল, আলু, সবজি, তেল, পেঁয়াজ, মরিচ বিক্রি করা হবে। সকলকে ঘরে রাখতে ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ নিয়েছে সাতক্ষরিা জেলা প্রশাসন। এছাড়া ঘরবন্দি কর্মহীন মানুষের বিনোদনের লক্ষে জেলা প্রশাসকের ফেসবুক পেইজ থেকে সরাসরি আবৃত্তি নিয়মিত রেখেছেন জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল। পাশাপাশি সাতক্ষীরা জেলার ঘরে থাকা স্কুল, কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রুপ ভিত্তিক রচনা, গল্প, কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীর নাম, শ্রেণি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নাম্বারসহ তাদের লেখা আগামী ৩০ এপ্রিল তারিখের মধ্যে dcsatkhira1984@gmail.com এই মেইল ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, লেখার বিষয় ছাত্র-ছত্রীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এদিকে সাতক্ষীরা থেকে করোনা টেস্টের জন্য এ পর্যন্ত ১৭৯ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। ২১ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আশার কথা হলো সবাই করোনা নেগেটিভ। অপরদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল তার অফিস কক্ষে সাতক্ষীরা জেলার চিংড়ি চাষী ও প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা সভা করেছেন। করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে চিংড়ি খাত ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ‘সাতক্ষীরাতে ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয় এবং ১ লক্ষ ৪২ হাজার টন মাছ উৎপন্ন হয় যার মধ্যে ৩ থেকে ৪ হাজার মে. টন বাগদা চিংড়ি এবং ৮০০ থেকে ৯০০ মে. গলদা চিংড়ি। এই শিল্পের সাথে প্রায় ৬৭ হাজার কৃষক এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ২.২০ লক্ষ মানুষ জড়িত। এই মুহূর্তে উৎপাদিত চিংড়ি স্থানীয়ভাবে এবং দেশের অভ্যন্তরে কীভাবে বাজারজাত করা যায় এবং বাকি চিংড়ি সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া সকল চিংড়ি চাষীর ডাটাবেস করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গতকালও এ বিষয়ে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত সভায় মৎস্য ও চিংড়ি খাতের জন্য প্রণোদনা এবং চিংড়ি চাষীরা কীভাবে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা পেতে পারে এবং ১০ বছর মেয়াদে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয় ও আলোচনা অনুসারে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সাতক্ষীরা জেলার কৃষির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক সভা জেলার কৃষি বিভাগের সাথে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার কোন জমি যেন অব্যবহৃত না থাকে সে বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। সভার নিন্মোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়: ১। বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখন থেকে কর্তন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের’কে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ সবধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে। জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ত্রাণ মনিটরিং কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলমান আছে। ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সংকটকালীন সময়ে বাস-মালিক সমিতির শ্রমিকদের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির শ্রমিক ৫০০ জনকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত খাদ্য সহায়তা বিতরণে প্রধান অতিথি হিসেবে সাতক্ষীরা-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল এবং পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, পিপিএম (বার)।
এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২ টি মামলায় ৫ হাজার টাকা, দেবহাটা উপজেলায় ৩ টি মামলায় ৮শ’ টাকা, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৩ টি মামলায় ৭৫ হাজার টাকা (১ টি অবৈধ ইট ভাটার অভিযানে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়), শ্যামনগর উপজেলায় ৫ টি মামলায় ২৭ হাজার ৫শ’ টাকা, আশাশুনি ৪ টি মামলায় ২ হাজার ৭শ’ টাকা, কলারোয়া উপজেলায় ৩ টি মামলায় ৯শ’ টাকা এবং জেলা প্রশাসনের ৫ মামলায় ৩ হাজার ১শ’ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে মোট ১৮৯৭ টি মামলায় প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, গত ৪/৫ দিনে নারায়নগঞ্জ, মাদারিপুর এবং শরিয়তপুর থেকে সেখানে ঘোষিত লক ডাউনের মধ্যেও ১০ হাজারের মত মানুষ সাতক্ষীরা জেলাতে এসেছে। এদের মধ্যে ২ হাাজর ৬শ’ ৪৩ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং ৭ হাজার ১শ’ ১৪ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৬ জন, শ্যামনগর উপজেলায় ৯৬ জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ৬শ’ জন, আশশুনি উপজেলায় ০৩ জন, দেবহাটা উপজেলায় ২৮ জন, তালা উপজেলায় ৯শ’ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আনসার ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে টহল জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে।যে সকল মানুষ লক ডাউন উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরা জেলা সীমান্তে আসছে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া অমানবিক। যারা ফিরে আসছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। অমান্যকারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 8,474,511 total views, 2,151 views today |
|
|
|