মার্চ ২৯, ২০২০
প্রয়োজনে বাইরে গেলে সঙ্গে পরিচয়পত্র রাখুন: আইজিপি
ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশজুড়ে চলমান করোনা ভাইরাস সংকটে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণকে বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। প্রয়োজনে বাইরে বের হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদর্শনের জন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। রোববার (২৯ মার্চ) করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। করোনা মোকাবিলায় সবাইকে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যাবেন না। জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা, বিভিন্ন হোটেল-দোকানের কর্মচারী কিংবা প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হবেন তারা পরিচয়পত্র রাখবেন। যাতে রাস্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কারণ জানতে চাইলে প্রদর্শন করতে পারেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা পুলিশের নিয়মিত দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি করোনা বিস্তার রোধে পুলিশের সব ইউনিট একযোগে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে পুলিশ সদর দপ্তরে ২৪/৭ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছি। এসএমএসে অপারেশনাল সব কমান্ডারকে সরকারের নির্দেশনা পৌঁছে দিচ্ছি। কন্ট্রোলরুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতির আপডেট নিচ্ছি এবং সে অনুযায়ী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা পৌঁছে দিচ্ছি। ‘পুলিশ প্রথম থেকেই আইইডিসিআর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের সব পর্যায়ে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে, যে কোনো প্রয়োজনে তাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’ পুলিশ সদস্যরা প্রথম থেকে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা লোকদের ইমিগ্রেশন থেকে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে নির্দেশনা সম্বলিত প্রচারপত্র দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ইমিগ্রেশন থেকে বিদেশফেরতদের তালিকার সংগ্রহ করে সব এসপি ও ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকেও সেই তালিকা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারাও পর্যালোচনা-পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। ‘পুলিশ সদস্যরা প্রথম থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়েছে। বিদেশফেরতদের প্রায় প্রতিটি বাড়ি স্টিকার দিয়ে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদের উল্লেখিত ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তাদের অবস্থান জানাতে অনুরোধ জানিয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। যেন তারা যেখানে আছেন সেখানেই কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে পারি।’ তিনি বলেন, পুলিশের বিনীত আহ্বানে যারা সাড়া দেননি এবং নির্দেশনা অমান্য করেছেন বিভিন্ন জায়গায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। পুলিশ নিজে থেকে বিভিন্ন জায়গায় কোয়ারেন্টিনে থাকাদের প্রণোদনা হিসেবে ফল, স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে। অনেক এলাকায় ফোন করলে সরাসরি বাজারও পৌঁছে দেওয়ার দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে পুলিশ। ‘করোনা সংকটে প্রচুর গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত গুজব এবং ভুল খবরের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সচেতনতার পাশাপাশি সাইবার টিম নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জড়িত কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বেশকিছু আইডি বন্ধ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, করণীয়-বর্জনীয় সম্বলিত ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করে সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের ফিল্ড কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাৎক্ষণিক সারা দেশের সংবাদ সংগ্রহ করে, সে অনুযায়ী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দিচ্ছি। পুলিশ সদস্যদের জনগণের সঙ্গে পেশাদার আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনার মানবিক এবং ধৈর্যশীল আচরণ করুন। শুধু বাংলাদেশই নয় সারা বিশ্ব এখন বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এসময় সবার পাশে থাকতে চাই, সকবার সঙ্গে থেকে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। নিশ্চয়ই আমরা সবাই মিলে এ যুদ্ধে জয়ী হবো। 8,475,314 total views, 42 views today |
|
|
|