Site icon suprovatsatkhira.com

পারুলিয়া সাপমারা খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ : নাম মাত্র কাজ করেই কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা!

মীর খায়রুল আলম: দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের সাপমারা খাল পুন:খনন ও সংস্কারের কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো) সাতক্ষীরার অধীনে ১৯ কিলোমিটার খাল পুন: খনন কাজ চলমান রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, খালের দু পাশের অসংখ্য কাঁচা-পাকা ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়ার পরেও অনেক স্থানে টিকে আছে প্রভাবশালীদের ভবন। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এই খাল খননে অনিয়ম হচ্ছে। খালের তলদেশ খনন না করে শুধু পাড়ের মাটি কেটে প্রস্থ বাড়ানো হচ্ছে। সেই মাটি আবার খালের পাড়েই ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে তো কোনো লাভ হবে না, উল্টো ক্ষতি হবে। বর্ষা এলে পাড়ে রাখা মাটি ধসে আবার খালে পড়বে। তখন খাল আরও ভরাট হবে, জলাবদ্ধতা বেড়ে যাবে। সাপমারা খাল পুনঃ খননের জন্য বরাদ্দ করা খনন কাজেই যদি ত্রæটি থাকে তাহলে এই টাকা যে জলে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশে নদী-খাল খননে অনিয়ম-দুর্নীতি একটি পুরোনো অভ্যাস। এ ধরনের ঘটনার অনেক নজির রয়েছে। অনিয়মের কারণে বহু প্রকল্প ব্যর্থ হয়ে যায়। যে উদ্দেশ্যে প্রকল্প নেওয়া হয়, তা পূরণ করতে পারে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে এভাবে জনগণের টাকা নয় ছয় করা আর কত দিন চলবে?
উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ব থেকে নৌকা, ট্রলার ও লঞ্চ যোগে আশাশুনি ও দেবহাটার মানুষ হাট-বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করত সাপমারা খাল দিয়ে। এ এলাকার মানুষের খুলনা যাতায়াতের পথ হিসেবেও ব্যবহার হত এ খালটি। এ খাল দিয়ে ট্রলার যোগে আনা নেওয়া করা হতো গোলপাতা সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী। তাছাড়া সাতক্ষীরা জেলার সাদা সোনা নামে পরিচিত বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি চাষের জন্য একটি বিশাল এলাকার পানি সরবরাহের কাজেও ব্যবহার হয় এই খালটি। কালের বিবর্তনে আর ভূমিদস্যুদের দখল প্রতিযোগিতায় ক্রমে ক্রমে খালটি তার নাব্যতা হারিয়ে বর্তমানে মরা খালে পরিণত হয়েছে। নাব্যতা হারানোর সাথে সাথে খালটি ভূমিহীনদের পাশাপাশি দখল করে নেয় কিছু প্রভাবশালী দখলবাজ। দখল করার পর মনগড়া কিছু অবৈধ পন্থার বৈধ কাগজ বানিয়ে গড়ে তুলেছে ব্যবসাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন অট্টালিকা। তাই খালের নব্যতা ফেরাতে ইছামতি নদীর সংযোগস্থল থেকে শালখালি পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন করতে দুইটি প্যাকেজ নেওয়া হয়। পরবর্তী টেন্ডারের মাধ্যমে খাল খননের দুটি প্যাকেজের কাজ পায় পটুয়াখালীর আবুল কালাম আজাদ ও ঢাকা বিজয় নগরের বশির উদ্দীন এমকে এন্টারপ্রাইজ নামের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। খনন কাজ শুরুর পর খালটির দু’পাশে বসবাসরত শতশত পরিবার উচ্ছেদ হয়ে আসবাবপত্র গবাদিপশু, নিয়ে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছে। তবে তাদের পুন:বাসন করা হবে বলে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্বাস দিয়েছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর এসও সাইদুর রহমান বলেন, ডেলটা প্লানের আওতায় এ খালটি খনন করা হচ্ছে। ১৯ কিলোমিটার খনন করা হচ্ছে। তবে শিডিউলে যা আছে তা থেকে কিছুটা বেশিই খনন করা হচ্ছে। কাজে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। অনিয়ম হলে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version