নভেম্বর ২০, ২০১৯
আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোন গুজব থাকবে না: কালিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবসে ইউএনও রাসেল
শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ, নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বে এখনও অনেক দেশ আছে যেসব দেশগুলো এখনও স্বাধীন হয়নি, অথচ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আপনারা সেদিন জীবন বাঁজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন হয়েছি। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করতে হবে। এই চেতনা যখন আমরা প্রকৃত অর্থে লালন করতে পারব তখনই সোনার বাংলাদেশ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোন গুজব থাকবে না। সেজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে কালিগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সন্তান কমান্ড আয়োজিত শহীদ সোহরাওয়ার্দী পার্ক চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্য প্রদানকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোজাম্মেল হক রাসেল এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আজ ২০ নভেম্বর কালিগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত দিবস। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সন্তান এবং তাদের নাতি -পুতিরা ছাড়া এই উপজেলার নতুন প্রজন্মের আর কেউ নেই কেন। স্কুল- কলেজের শিক্ষার্থীরা নেই কেন। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব এবার কোন অনুষ্ঠান হলে নতুন প্রজন্মের সবাইকে এসব অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত করবেন। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতা চেতনায় উদ্বুর্ধ করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর কালিগঞ্জের ওয়াবদা কলোনিতে অবস্থানরত পাকবাহিনী পশ্চিমা রেঞ্জার ও কিছু রাজাকারদের উপর মুক্তিযোদ্ধারা ভোর ৫ টার দিকে আক্রমণ করলে প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে ৪০ জন পাকসেনা মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। অন্য পাকসেনারা কালিগঞ্জ থেকে পালিয়ে সাতক্ষীরার আলিপুর ও পুষ্পকাটি নামক স্থানে চলে যায়। ফলে শত্রুমুক্ত হয় কালিগঞ্জ। এই খবর মুহূর্তের মধ্যে কালিগঞ্জের গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় রাস্তায় জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে। সবাই মিলে কালিগঞ্জের ডাকবাংলা চত্ত্বরের বকুল তলায় উত্তোলন করেন স্বাধীন বাংলার পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কালিগঞ্জ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এসএম গোলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খান আসাদুর রহমান, বিশিষ্ট সাহিত্যিক গাজী আজিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম, দিপালী রাণী ঘোষ, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুজ্জামান জামু, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক নিয়াজ কওছার তুহিন, সহকারী কমান্ডার শেখ মনির আহমেদ প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রূহের মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির সম্মৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা এসএম মমতাজ হোসেন। পরবর্তীতে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলণ করা হয়, সকাল ৯ টায় বিজয় স্তম্ভে, সাড়ে ৯ টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, ১০ টায় সরকারি কবরস্থানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস মৃধা ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের কবর জিয়ারত করা হয়। কবর জিয়ারতকালে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোজাম্মেল হক রাসেল, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম আজিজুর রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিমসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সূধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 8,583,006 total views, 10,776 views today |
|
|
|