অক্টোবর ২১, ২০১৯
পাইকগাছায় বনায়নের চর ভরাটি জমি দখল করে চিংড়ি ঘের: অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না
পাইকগাছা প্রতিনিধি: পাইকগাছায় সামাজিক বনায়নের চর ভরাটি জমি দখল করে চিংড়ি ঘের করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন দখলকারীরা পরিকল্পিত ভাবে নাফনা ও কোদাল দিয়ে গোল ঝাড় নষ্ট করে দিচ্ছে। কেটে ফেলছে বনায়নের গাছ। পরিবেশবিদরা বলছেন, বনায়নের ভিতর বাঁধ দেয়ার ফলে লবণ পানি আটকে থাকায় কেওড়া, বাইন, ওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে যাচ্ছে। সুফল ভোগীদের অভিযোগ উপজেলা বন কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না। স্থানীয়রা জানায়, ২০১৪-২০১৫ সালে উপজেলার লতা ইউপির হাঁড়িয়া মৌজার ১৮/১৯ নং পোল্ডারে হাঁড়িয়া পুরাতন খেয়াঘাট হতে দক্ষিণে হাঁড়িয়া পাকা ঘাট পর্যন্ত শিবসা নদীর চর ভরাটি প্রায় ১শ’ বিঘা সরকারি জমিতে সবুজ বনায়ন গড়ে ওঠে। এখানে গোলপাতা, কেওড়া, বাইন, কাঁকড়া, সুন্দরী, ওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। সৃজিত বনভূমি সংরক্ষণ ও গবাদি পশু নিয়ন্ত্রণের জন্য সাবেক নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবিরউদ্দিন সরেজমিনে গিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। আজও তা সংরক্ষিত আছে এবং বর্তমান এ বনভূমি মিনি সুন্দরবনের আকার ধারণ করেছে। একই সাথে এ বনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এদিকে হাঁড়িয়া চর বনায়ন সমিতির সভাপতি গৌতম রায় ও সম্পাদক প্রশান্ত বিশ্বাস বাবু অভিযোগ করেছেন চলতি বছরের মে মাসে ও তার পূর্বে উপজেলার মঠবাটী গ্রামের ছইল উদ্দিন সরদার, ঘোষাল গ্রামের আব্দুল্লাহ গাজী ও খবির গাজী, রেজাউল ইসলাম দু’দফায় বনায়নের বড় একটি অংশ জমিতে বাঁধ দিয়ে দখল করে নিয়ে চিংড়ি ঘের করছে। জানা গেছে, বর্তমানে ডিড নিয়ে উপজেলার ঘোষাল গ্রামের এমদাদুল নামের এক ব্যক্তি চিংড়ি ঘের পরিচালনা করছেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ইতিপূর্বে পরিবেশ বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সর্বশেষ ২৭ মে খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রার) সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবুর কাছে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে এমপি বাবু তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে নির্দেশনা দেন। ইউএনও এ ঘটনায় ওসি ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বললেও আজও তার প্রতিকার মেলেনি। হাঁড়িয়া সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি সম্পাদক সহ কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, সদস্য কামরুল হাওলাদার, ফজলু হাওলাদার ও রাবেয়া বেগম অভিযোগ করেন, নাফনা, কোদাল দিয়ে গোল ঝাড় নষ্ট করে দিচ্ছে তেমনি কেটে ফেলছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। অন্যদিকে লবণ পানি আটকে থাকায় বিভিন্ন গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। সুফল ভোগীদের অভিযোগ, এ ঘটনার জন্য তারা উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়কে দায়ী করছেন। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে ঘের মালিক এমদাদুল হক বলেন, আমি ডিড নিয়ে ঘের করছি। তিনি এর বাইরে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় বলেন বনায়নের সময় কেউ সম্পত্তি দাবি করেনি কিন্তু এখন দখলদাররা তাদের সম্পত্তি দাবি করছে। তিনি আরও বলেন, এমপির কাছে অভিযোগ ও থানায় বসা-বসি হলে জমি পরিমাপের সিদ্ধান্ত হলেও আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি। সদ্য যোগদানকারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, আমি বনায়নের জমি দখলের বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। 8,590,577 total views, 7,263 views today |
|
|
|