জুলাই ২৫, ২০১৯
যানজটে ভোগান্তিতে পৌরবাসী
নূর মনোয়ার : সাতক্ষীরা শহরের প্রধান সড়কে যানজট নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শ্রাবণের এই তীব্র গরমে সীমাহীন যানজটে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারীরা। প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তা সরু হওয়া, প্রতিদিন নতুন নতুন যানবাহন নামা, যত্রতত্র পার্কিং, যেখান সেখানে যাত্রী উঠানো নামানো, ফুটপাত না থাকা ও অবৈধ স্থাপনাসহ বিভিন্ন কারণে দিনদিন যানজট তীব্র হয়ে উঠেছে। একটি শহরে সুষ্ঠভাবে জনগণের চলাচলের জন্য শহরের আয়তনের ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকা আবশ্যক, কিন্তু সাতক্ষীরায় আছে এর অর্ধেকেরও কম। যানজটের ফলে প্রতিদিন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে স্বাস্থ্যের। সাতক্ষীরা শহরে প্রতিদিনই নিউ মার্কেট মোড়, গার্লস স্কুল মোড়, পাকাপুলের মোড়, কেষ্ট ময়রার মোড়, ডে নাইট কলেজ মোড়, সঙ্গীতা মোড়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানজটের কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক ঘন্টা শহর এক প্রকার অচল হয়ে পড়ে। নিত্য প্রয়োজনীয় কোন কাজেই সঠিকভাবে কেউ করতে পারছে না। বাঁকালের বাসিন্দা সাকিল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় সকাল থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াত শহরের এসব সড়কে। এছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনে সমগ্র জেলার বিভিন্ন পেশার মানুষ জেলা শহরে আসেন। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সুলতানপুরের সোনিয়া রহমান জানান, বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত যানযটে পড়তে হয়। এই ভেবসা গরমে ধুলাবালির মধ্যে ভ্যানের উপর দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। ফলে শিশুরা সর্দি কাশি সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কেষ্ট ময়রার মোড়ের ওহি স্টোরের মালিক আসাদ হোসেন জানান, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আমাদের বেচা কেনা হয় সকালবেলা অফিস টাইমে। কিন্তু এসময়ে সব থেকে বেশি যানজট থাকে। গত এক বছর যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ ব্যবসার উপর আমার সংসার চলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দোকানের সামনে যানজট থাকে, বেচাকেনা নেই বল্লেই চলে। এখানে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যানজটের ফলে সৃষ্ট দুর্ভোগের বিষয় অবগত আছেন এরপরও যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক কেন দিচ্ছে না বুঝিনা। ইজিবাইক চালক বাবলু গাজী জানান, গার্লস স্কুল ছুটির পর শহীদ নাজমুল সরণিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। যেখানে সেখানে গাড়ি রাখা, ইচ্ছা মত গাড়ি ঘোরানোর কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্রায় সময় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক থাকলে এখানে আর যানজট হতো না। যানজট হয় শহরে আর ট্রাফিক থাকে বিনেরপোতা আর বাঁকালে। পথচারী ইকবাল হোসেন জানান, শহরের প্রধান প্রধান সড়কে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ,যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানো নামানো যানজট সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ। যানজটের সমাধানে প্রয়োজন টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ। বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজন ট্রাফিক পুলিশ এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে প্রয়োজন ওভারব্রিজ, ফুটপাত ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ। এ বিষয়ে জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোমিন হোসেন সুপ্রভাত সাতক্ষীরাকে জানান, শহরবাসীকে একটু শান্তিতে রাখার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষ বেড়েছে প্রচুর কিন্তু রাস্তা প্রসস্থ হয়নি। নিয়ম মানতে চায়না কেও, সে জন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের জনবলের সংকট আছে। ২৬ জনের মধ্যে আছে ২৩ জন, কেও কেও ছুটিতে থাকে। দুই শিপটে ৮টা থেকে ২টা এবং ২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ডিউটি থাকে। জনসাধারণের চরম দুর্ভোগ লাঘবে এবং সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর সাতক্ষীরা গড়ার লক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সচেতন মহল। 8,508,128 total views, 1,582 views today |
|
|
|