মো. আব্দুল্লাহ সিদ্দীক
বর্ষাকন্যা যাই যাই করে আপন অশ্রু সজলে, শরৎ সুন্দরীর আবির্ভাবের অদৃশ্য আয়োজন চলে। ভাদ্রের ভোরের সূর্য্যি মামা মিষ্টি আলোর পরশ দেয়, প্রকৃতির কানে কানে শরৎ সুন্দরী আগমন বার্তা জানায়। হঠাৎ থেমে যায় বর্ষা মেয়ের মেঘের গুরু গুরু, নিঃশব্দ চরণে শরৎ সুন্দরী যাত্রা করে শুরু। শিশির সিক্ত দূর্বাঘাসে সূর্য কিরণ পড়ে, হাজারো মুক্ত দানার রূপ শিশির ধারণ করে। যথা সময়ে শরৎ সুন্দরী মোদের দেশে আসে, শস্যের শ্যামলতায় উদ্ভাসিত হয়ে যেন মাতৃভূমি হাসে। নীল আকাশের শুভ্র মেঘ নানান ফুলের শোভা, মাট-ঘাটে জ্বলে ওঠে দিনকরের প্রভা। সুনীল আকাশের ছায়া পড়ে শান্ত নদীর বুকে, বিলের জলে শাপলা ফোঁটে সাদা ও লাল টুকটুকে। নদীর তীরে সাদা কাঁশফুল হাতছানি দিয়ে ডাকে, এসো এসো কিশোর বুড়ো শান্ত নদীর এ বাঁকে। মৃদু বাতাসের হিল্লোলে হিল্লোলে আন্দোলিত হয় কাঁশবন, শরৎ সুন্দরীর মনোরম দৃশ্যে মেতে ওঠে মন। নদীর চরে চখাচখি,পানকৌড়ি, বাঁলি হাসের ডাক, শরৎ সুন্দরীর এই অপরূপ দৃশ্য লাগায় যেন তাক। বাইতে বাইতে নাও মাঝিগণ গেয়ে ওঠে ভাটিয়ালি গান, পুকুর পাড়ে, গাছের ডালে মাছরাঙা করে ধ্যান। স্বচ্ছ জলে ঝেঁয়া-পুটি যখনি ভেসে ওঠে, মাছরাঙা ছো মেরে, তুলে নেয় তারে ছোট্ট লম্বা ঠোঁটে। কলসি কাঁকে হেঁটে চলে গাঁয়ের অনেক বধূ, শরৎ সুন্দরী দেখায় মোদের তার অপরূপ যাদু। শরতে জ্যোৎস্নার মোহিত রূপ মোর কল্পনায় ভাসে, চাঁদের আলোয় কল্পনার পরীরা ডানা মেলে নিচে আসে। হালকা কুয়াশা, শেফালী, শিউলি, জুঁই শরৎ সুন্দরীর উপহার, স্বচ্ছ জ্যোৎ¯œার নির্মল আনন্দ সকল ঋতুকে মানায় হার। ঋতুরাণীর প্রকৃতি উপভোগে সবে গ্রামে ছুটে আয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গাপূজার মহাধুম পড়ে যায়। ……………………….
8,589,109 total views, 5,795 views today