সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
আইন ও শালিস কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দের শ্যামনগরে মুন্ডাপাড়ায় পরিদর্শন
নিজস্ব প্রতিনিধি: জমি দখলকে কেন্দ্র করে ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীন হওয়ার পর স্থানীয় পরান সরদার ও বদু সরদারের লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্য মাদার গাজী ও বুধ গাজীর হাতে প্রাণ হারান শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট গ্রামের অন্তাখালি মুÐাপাড়ার বাঁশিরাম মুÐা ও তার ছোট ছেলে হেমেন্দ্র মুÐা। গ্রেপ্তারি এড়াতে পরান সরদার ও বদু সরদারের পরিবার ভারতে চলে যায়। এরপরও ধুমঘাট মৌজার ১১ ও ১২ দাগের ৩০ বিঘা জমি বন্ধক নেওয়া ফকির মÐলের জমি তার ছেলে মহাদেব মÐল ও শুকচাদ মÐলের নামে রেকর্ড হয়। বাকী ১৫ বিঘা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফকির মÐলের জমি পাতড়াখোলার সামছুর মোড়লের তিন ছেলে রশিদ, বাবলু ও মাসুদ তিন বিঘা দখল করে। সাড়ে ৬ বিঘা দখল করে মোকছেদ ও তার ছেলেরা। ওই দুই দাগের মুল্লুক চাদের ৩০ বিঘা জমির মধ্যে ২০ বিঘা বেআইনিভাবে অন্যরা ভোগদখল করলেও বাকি ১০ বিঘা দখলে নেই মুল্লুক চাদ মুÐার ওয়ারেশদের। শুক্রবার সকাল ১১টায় শ্যামনগরের ধুমঘাট অন্তাখালি মুÐাপাড়ায় ঢাকা আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্ব্হাী পরিচালক নূর খান লিটন, এইচআরডিএফ সমন্বয়কারি আবু আহম্মদ ফয়জুল কবির, হাসিবুল হাসান সূর্য, মানবাধিকার কর্মী রঘুনাথ খাঁ, এইচআরডিএফ এর সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত ও বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের যুব কমিটির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনোদ্বীপ মÐলের উপস্থিতিতে এসব কথা তুলে ধরেন স্থানীয় আদিবাসী মুÐা সুরক্ষা কমিটির আহবায়ক শ্রীরাম চন্দ্র মুÐা, যাদব মুÐা, গোপাল মুÐা, নিহত নরেন্দ্র নাথ মুÐার ছেলে সনাতন মুÐা, ফণীন্দ্রনাথ মুÐা প্রমুখ। মুÐা স¤প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ধুমঘাট মৌজার ৯,১০,১৩ ও ১৪ দাগের ২৭ বিঘা জমির মধ্যে ২০ বিঘা জমি তারা ২০১৭ সালে খাজনা দিয়েছেন। চারটি দাগের মধ্যে ১৪ দাগে রাশেদুল ও তার ভাই এবাদুল জালজালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে আট বিঘা জমি দাবি করে আসছিল। রাশেদুল ও এবাদুল আদালত থেকে ডিক্রী পাওয়ার পর নরেন্দ্র নাথ মুÐা ২০১৭ সালে ডিক্রী রদের মামলা করলে ঘুম হারাম হয়ে যায় রাশেদুল ও এবাদুলের। আর্থিক সুবিধা নিয়ে শ্যামনগরের তৎকালিন সহকারি ভূমি কমিশনার শেখ আব্দুল্লাহ সাঈদ আদালতে জমির মালিকানা সংক্রান্ত মিথ্যা প্রতিবেদন দেন। এ প্রতিবেদনকে পুজি করে ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. শুকুর আলী রাশেদুল ও এবাদুলের পক্ষ নেন। মুÐাদের জমি নেই উল্লেখ করে গত ১৯ আগস্ট শুকুর আলী ওই ৮ বিঘা জমি জবরদখলের নেতৃত্ব দেন। মুÐা পরিবারের তিন নারী ও নরেন্দ্রনাথ মুÐার উপর হামলার নেপথ্য নায়কও তিনি। হামলার দুই সপ্তাহেও স্থানীয় সাংসদ এসএম জগলুল হায়দার, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এসএম ফজলুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলনসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকেই হামলাকারিদের গ্রেপ্তারে বাধা দিচ্ছেন। ফলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রিপন মল্লিক আসামী গ্রেপ্তারে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছেন না। মামলার তদন্তভার অন্য কোন আইনপ্রয়োগকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় মুসলিম স¤প্রদায়ের কয়েকজন জানান, শুধু শুকুর আলী নন, তার ভাই গোলাম মোস্তফা বাংলা ভাই, ভাইপো জাহিদসহ একটি ভাড়াটিয়া গোষ্ঠী বংশীপুরের প্রাদার্স ক্লাব ও মুন স্টার ক্লাবের সদস্যদের অধিকাংশই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মুÐাদের জমি দখল করতে যান। তারা এ নিয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করেছিল বলে জানান। 8,589,322 total views, 6,008 views today |
|
|
|