আগস্ট ২৩, ২০২২
কয়রায় অসময়ে তরমুজ চাষে প্রভাষক শাহাবাজ আলীর বাজিমাত
মো. রউফ, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি : কয়রায় অসময়ে তরমুজ চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন প্রভাষক শাহাবাজ আলী। উপক‚লীয় জনপদ কয়রায় তরমুজের মৌসুম যখন শেষ তখনই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে অসময়ে তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হয় এই কৃষি প্রেমিক প্রভাষক। চাষ করেই প্রথমবার অধিক ফলন পেয়ে বাজিমাত করেছে তিনি। অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষের জন্য নিজ ভিটায় ৪০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করে সম্প্রতি কয়েক মন তরমুজ বাজারজাত করতে পেরে বেজায় খুশি তিনি। সরেজমিনে ঘুরে তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার উপক‚লীয় উপজেলা কয়রার লবণাক্ত মাটিতে বড় ধরনের সুস্বাদু তরমুজ উৎপাদন করে বাজারজাত করায় বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে তার মাচায় অসময়ে ব্যাপকভাবে তরমুজ ঝুলে আছে এ ধরনের ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা কৃষি অফিসসহ আশে পাশের কয়েকটা গ্রামের মানুষ দেখতে ভিড় জমাচ্ছে প্রভাষকের বাড়িতে। তবে শুধু তরমুজ নয় বিগত বছরে অসময়ে তিনি শিম চাষেও সাফল্য অর্জন করায় অনেকে তাকে কৃষি প্রেমিক হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। প্রভাষক শাহাবাজ আলী বলেন, প্রতিদিন সকালে ২ ঘণ্টা কৃষি ক্ষেত দেখাশোনা করেন, তার কলেজ থেকে ফিরে বিকেলে আবারও লেগে যান সবজির তদারকিতে। তিনি বলেন, তার এই তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহ জোগান কয়রা সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, বিগত জুনের প্রথমেই পরীক্ষামূলকভাবে ৩শ’ মাদায় বারি-১ জাতের ৬শ’ তরমুজ বীজ রোপণ করেন এবং রোপণের ৮০ দিন পর থেকে ফল উত্তোলন শুরু করেছেন। অত্যন্ত সুস্বাদু অসময়ের এই তরমুজ বাজারে ব্যাপক হারে চাহিদা থাকায় ভাল দামও পাচ্ছেন প্রভাষক শাহাবাজ আলী। প্রতিটি তরমুজ গড় ৬ থেকে ৮ কেজি ওজন হয়েছে এবং প্রতি কেজি পাইকারি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়ায় লাভের আশা দেখছেন তিনি। তার পরামর্শ বেকার যুবকরা যেন সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেশকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন এমনটা প্রত্যাশা তার। উপজেলা কৃষি অফিসার আছাদুজ্জাামন সম্প্রতি তরমুজ ক্ষেতটি পরিদর্শন করে সন্তোশ প্রকাশ করেন। কয়রার কৃষকরা এ ধরনের কাজে যাতে উৎসাহিত হয় সে জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ লবণাক্ত মাটিতে লাগানো অসময়ে এই তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদককে বলেন, বারি তরমুজ-১ হাইব্রিড না হওয়ার কারণে কৃষকরা এই তরমুজ খেয়ে নিজেরা বীজ সংরক্ষণ করতে পারবে। দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়েও সুস্বাদু, অধিক পরিমাণে এবং বড় তরমুজ উৎপাদনের সাফল্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে কয়রার সব জায়গায় এই চাষাবাদের জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ওই কৃষি কর্মকর্তা। 8,412,107 total views, 260 views today |
|
|
|