জানুয়ারি ১৯, ২০২২
কলারোয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ছয় মাসেই ৫ কোটি রাজস্ব আয়: নেই ভবন
ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া: সাতক্ষীরার কলারোয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস আঙ্গিনায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তুপের দুর্গন্ধে নাভিশ্বাসে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে আসা সাধারণ মানুষেরা। এমনকি অফিসের সামনের জায়গা দখল নিয়ে স্থানীয়রা হোটেল তৈরি করছেন বলে নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সাব রেজিস্ট্রার কর্মকতা মঞ্জরুল হাসান। বুধবার (১৯জানুয়ারি) দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে বেহাল দশার খবর শুনে সরোজমিনে পরিদর্শন করেন কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালটু। সরোজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস প্রাঙ্গণে স্থানীয়দের যে ইট এবং ময়লার স্তুপ রয়েছে তা আসলেই অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। এমনকি উপজেলা পরিষদের জমি দখল নিয়ে যে হোটেল তৈরি হচ্ছে হোটেলের মালিক কতৃপক্ষকে পরিষদের জমি ছেড়ে হোটেল নির্মাণ করার জন্য বলা হয়েছে। রেজিস্ট্রি অফিসের আবর্জনার যে অংশ সামনে রয়েছে তা দুই দিনের মধ্যেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসার নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছেন বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য আহ্বান করেন তিনি। তিনি আরো বলেন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মালিকানাধীন জমি ভবন নেই। নির্দিষ্ট জমি ও একটি ভবনের প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুরুল হাসান বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নির্দিষ্ট কোন ভবন না থাকায় নকল নবিশ দলিল লেখক ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য অফিসের এমন দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এ সময় তিনি আরো বলেন অফিসের সামনের স্থানীয়দের কিছু ইট ও যত্রতত্র ময়লা রাখায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ময়লা ইট ও অবৈধ জায়গা দখল অপসারণ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ জানানো হয়েছে।
হোটেল মালিক কর্তৃপক্ষ আলী হোসেন জানায়, দীর্ঘদিনের নিজেদের জমির উপরে হোটেল করা হচ্ছে তবুও যদি উপজেলা পরিষদের জমিতে এক হাতও নেওয়া হয়ে থাকে তবুও সেটা সরিয়ে নেয়া হবে। সাবরেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, গতবছর ইংরেজি জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর ছয় মাসে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫ কোটি ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ২ টাকা ৫০ পয়সা এবং ৩ হাজার ৭৭৭টি দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে কেবল স্থানীয় সরকারের কর আদায় হয়েছে ছয় মাসেই ২ কোটি ৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৫৩ টাকা ২৫ পয়সা। দলিল লেখক আব্দুল মালেক বলেন, প্রায় ১৯৯২ সালের পূর্বে উপজেলাতে সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রম যেখানে চলত সেখানেই এখন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চলে। কিন্তু আজও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোন ভবন বা মালিকানা স্বত্ব নেই যে কারণে অফিসের সকল কর্মচারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধাও বন্ধ নেই ভবন ল্যাটিন সুপেয় পানির ব্যবস্থা বসন্তের ছোট্ট কক্ষে ৫ জনের বসার জায়গাতে অনেক কষ্ট করে ১২জন করে অতিরিক্ত মেহরার নকল নবিশ কাজ করেন। সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও যেমন নেই তেমনি স্যানিটেশনের ভালো ব্যবস্থাও নেই তবে এ সকল জর্জরিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কর্মরত কর্মচারী ও স্থানীয় নাগরিক। এ বিষয়ে উপজেলা সুজনের সহসভাপতি আজাদুর রহমান খান চৌধুরী পলাশ বলেন, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যেখান থেকেই সরকার প্রতি মাসেই কোটি টাকার মতো রাজস্ব আয় করে থাকে। ভবন না থাকায় ছোট্ট ছোট্ট কক্ষে একাধিক মানুষের ঠাসাঠাসি ভাবে বসে কাজ করতে হয় কর্মরত কর্মচারী দলিল নবিশদের। তবে একটি ভবন অতি গুরুত্বপূর্ণ অফিসের নামে জায়গা বরাদ্দ পেলে যেমন আঙ্গিনা গুলো সুন্দর হবে তেমনি কাজের অগ্রগতির সাথে সাথে দেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। 8,590,986 total views, 7,672 views today |
|
|
|