অক্টোবর ৩১, ২০২১
তালার খরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাটু পানি শিক্ষাদান চলছে রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘরে
নিজস্ব প্রতিনিধি: তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নে অপরিকল্পিত ঘের করে মাছ চাষের ফলে খরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। ফলে বাঁশের চটা ও গোলপাতা দিয়ে বানানো অস্থায়ী খুপড়ি ঘরে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। গতকাল সকালে তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের খরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেয়ে দেখা গেছে মুল ভবনসহ শৌচাগার ও টিউবওয়েল পানিতে নিমজ্জিত। রাস্তার পাশেই একটি ছোট জায়গা বাঁশের চটা দিয়ে ঘিরে ও গোলাপাতার ছাউনির চালের মধ্যে নয়জন চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়ে চলছে পাঠদান। একই ঘরের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ অপর চারজন শিক্ষক অবস্থান করছেন। খুপড়ি ঘরের সঙ্গে বাঁধা বাঁশের খুটিতে বাতাসে পত পত করে উঠছে জাতীয় পতাকা। চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী দীপু মন্ডল, জুবাইদা সুলতানা যুঁথি ও রোজ মন্ডল জানান, পানিতে মূল ভবন জলমগ্ন রয়েছে। তাদের বাথরুম ও টিউবওয়েল পানির ভিতরে। করোনাকালিন সময়ে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় খোলা না থাকলেও গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের ক্লাস চলছে বিদ্যালয়ের মূল ভবনের সামনে রাস্তার পাশে। জায়গার স্বল্পতার কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থী মিলে মিশে একাকার। এখন কিছু করার নেই জানিয়ে তারা বলে, এক সময় কপোতাক্ষ নদ তাদের কাছে অভিশাপ ছিল। কপোতাক্ষ খনন হয়েছে। প্রতি বছর আর কপোতাক্ষের দু’ তীর ভেসে তাদের বাড়ি ঘর ডুবে যায় না। এবার বেশি বৃষ্টি হওয়ায় ও নিয়ম না মেনে ঘের করার কারণে বিদ্যালয়ের ভবনসহ এলাকার বেশ কিছু বাড়িও রয়েছে পানির নীচে। এখন তাদের প্রসাব পায়খানা পেলে ও পানির দরকার হলে দূরবর্তী বাড়িতে যেতে হয়। এ সমস্যা আর কত মাস তাদের সইতে হবে তা নিয়ে সন্দিহান তারা। খরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ জাকির হোসেন বলেন, তার বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে শুধু এবার নয়। গতবারও এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রতি বছর চার থেকে সাড়ে চার মাস তাদের এ বেহাল পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হয়। একইভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি বিকাশ চন্দ্র রায় জানান, অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও ভবানীপুর খালের পাশে বাঁধ দেওয়ায় বারাত বিলের পানি সরতে পারছে না। ঘেরের কারণে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মোহনা বাজার যাওয়ার রাস্তাটিও সরু হয়ে গেছে। বাই সাইকেল নয়, হেঁটে যাওয়াটাই দুষ্কর। প্রশাসনিকভাবে উদ্যোগ না নিলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সূযোগ নেই। 8,591,447 total views, 8,133 views today |
|
|
|