সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
সংসারে অভাব চায়ের দোকান কলেজ প্রভাষকের
কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : একজন সাধারণ ঘরের চা বিক্রেতা তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও তার নিজের মেধার জোরে আজ ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তবে আজ যার কথা বলব সেও একজন চা বিক্রেতা। কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না তার। কী সেই ঘটনা? ঘটনাস্থল সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায়। চাকুরি জীবনে বেতন না পেয়ে হতাশ হয়ে শেষে সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে ফুটপাতে দোকান খুলে বসল প্রভাষক ভোলানাথ মন্ডল। ছোটবেলা থেকে মেধাবী ভোলানাথ ২০০৩ সালে খুলনা বি.এল বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করেন। অভাব অনাটনের সংসারে ধার দেনা করে শ্যামনগর উপজেলার প্রভাশ চন্দ্র মন্ডল ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে বড় চাকুরি করে, ধার দেনা পরিশোধ করে সংসারে হাসি ফুটাবে এই স্বপ্নে ভোলানাথকে লেখাপড়া শিখেয়েছিলেন। চাকুরিও পেয়েছিলেন ২০১০ সালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কাজীরহাট ডিগ্রি কলেজে বাংলা প্রভাষক হিসেবে। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ বেতন না পাওয়ার কারণে সেই মানুষটিকে বাধ্য করেছে চায়ের দোকান দিতে। বাবা অসুস্থ থাকায় ৬ সদস্যের পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব তার একারই। সেই দায়িত্ব বোধ থেকে এবং আলোকিত সমাজ গড়তে তিনি বেছে নেন শিক্ষকতার মহান পেশা। তিনি একজন সংস্কৃতমনা লোক হিসেবে কলারোয়ায় পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টিউশনি করে সংসার চালালেও করোনায় সবকিছু বন্ধ থাকায় তার সেই আয়ের পথটিও বন্ধ হয়ে যায়। কোন উপায়ন্তর না দেখে তিনি নিজের সংসার চালানোর জন্য বেছে নিয়েছেন কলারোয়া বাজারের ফুটপাতে ভ্রাম্যমান চা, পান ও আখের দোকান। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় শিক্ষা মন্ত্রনালয় যদি ভোলা নাথের মত মেধাবীর মেধার বিচার করে একটু সদয় হয়, তবে আগামী দিনে এই ভোলানাথরাই হবে দেশের সম্পদ।
8,604,861 total views, 12,740 views today |
|
|
|