জুন ২৫, ২০২১
‘নিজের হলে সর্দি-জ্বর অন্যের হলে করোনা’ আশাশুনিতে নমুনা পরীক্ষায় অনীহা, ভাইরাস ছড়াচ্ছে অঞ্চল জুড়ে
সমীর রায়, নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনিতে করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউ উদ্বেগ জনক হারে বাড়ায় জনসমাগম এড়িয়ে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। গত বছরের ৪১ এবং এ বছরে ২য় ঢেউয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদেষ্ণা সরকার বলেন, আশাশুনির অবস্থা দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর এজন্য দায়ী নমুনা প্রদানে অনীহা, অসচেতনতা ও লকডাউনের ভয়। প্রতিদিনই উপজেলায় তিন থেকে চারজন শনাক্ত হচ্ছে। উপজেলায় সর্বমোট ১৭৫ জন সংক্রমিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে শোভনালী, বুধহাটা ও আশাশুনি সদর ইউনিয়ন। শোভনালী ইউনিয়নে ৩৯ জন, বুধহাটা ইউনিয়নে ৩০ জন, আশাশুনি সদরে ৩০ জন। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নে দু’একজন করে করনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শোভনালী, বুধহাটা ও আশাশুনি সদরের বাজার ঘাট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তবে গত কয়েকদিনে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় চেয়ারম্যান বৃন্দ জোর ভূমিকা রাখায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে শুনেছি। আশাশুনি হাসপাতালে শনিবার ও মঙ্গলবার দুইদিন নমুনা সংগ্রহের দিন ধার্য করা হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহ দিতে মানুষ উৎসাহী নয়। কিছু সচেতন ব্যক্তি ছাড়া অধিকাংশ মানুষই নানা ভয়ে নমুনা প্রদান করতে ইচ্ছুক নয়। তারা স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন যেগুলো হিতে বিপরীত হতে পারে। নমুনা প্রদান ও উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা মাইকিং করে, স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারীর মাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করে চলেছি। কিন্তু লকডাউন ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ভয়ে নমুনা প্রদান করছেন না। আশাশুনি হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে কয়েকদিন আগে একজন রোগী ছিলেন। তবে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আমরা রোগীর পরিস্থিতি বুঝে এখানে সেবা দিয়ে থাকি। তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটার আশঙ্কা আছে বুঝলে আমরা সাতক্ষীরা সদরের মেডিকেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি। গ্রাম্য ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই বিপদের দিনে আপনারা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া চিকিৎসা করা ঠিক নয়। রোগীর কথা চিন্তা করে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে তাকে নির্দ্বিধায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করবেন। সেখানে উন্নত চিকিৎসা ও সার্বিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। ভ্যাকসিন এর দ্বিতীয় ডোজ কবে দেওয়া হবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন- সময়মতো না আসার ফলে এমনটি হয়েছে। বর্তমানে সাতক্ষীরা সদরে টিকা কার্যক্রম চালু রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে কবে নাগাদ শুরু হবে তার কোনো নির্দেশনা পায়নি। পরবর্তী নির্দেশনা পেলেই আমরা তার কার্যক্রম শুরু করব। সবশেষে তিনি বলেন, সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। অযথা ভয় না পেয়ে মাক্স পরেন, জনসমাগম এড়িয়ে চলেন, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেন আর কোনরকম উপসর্গ দেখা দিলে সাথে সাথে নমুনা পরীক্ষা করে নেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করেন। 8,413,527 total views, 1,680 views today |
|
|
|