মে ২৩, ২০২১
ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: নড়বড়ে উপকূলের বেড়ি বাঁধ প্রস্তুত ১৬৪৫টি আশ্রয় কেন্দ্র
জি এম মাছুম বিল্লাহ: আম্পানের দগদগে ক্ষত শুকানোর আগেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগমনে উপকূলীয় এলাকা জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত ২০শে মে ২০২০ সালে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় অঞ্চলের দানবীয় কায়দায় আঘাত হানে। স্বাভাবিক ছাড়া জোয়ারের পানি ৭ থেকে ১০ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে উপকূলীয় বেডড়িবাঁধ গুলো ভেঙে লোকালযয়র সাথে একাকার হয়ে যায়। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধগুলো এখনো সঠিকভাবে সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। যেগুলো সংস্কার হয়েছে সেগুলোর অবস্থাও ভালো না। উপকূলীয় এলাকার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ গুলোর মধ্যে ৫টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ যার মধ্যে ঝাপা, পশ্চিম পাতাখালি, কামালকাটি, বন্যাতলা ও চাউলখোলা। ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়নটিতে তেরোটি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে তবে মোট জনসংখ্যার তুলনায় এটি অত্যন্ত নগণ্য। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট ইতিমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে যেগুলো হচ্ছে পশ্চিম দুর্গাবাটিতে তিনটি, পূর্ব দুর্গাবাটিতে দুইটি, দাতিনাখালি আজিজ ম্যানেজারের বাড়ির সামনে, মহাসিন সাহেবের হুলা, চুনা ও কলবাড়ী। দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ৯টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান। মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল জানান, ইউনিয়নটিতে বেড়িবাঁধের ৫ জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হচ্ছে বড় ভেটখালী খালের গোড়া। দক্ষিণ কদমতলা, সিংহরতলী, চুনকুড়ি ও মৌখালী নদীর ধার। ইউনিয়নটিতে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে চৌদ্দটি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি। গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ইউনিয়নটিতে গত আম্পানে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে প¬াবিত হয়েছিল। গাবুরা ইউনিয়নটি সম্পূর্ণ একটা দ্বীপ হয় চারিপাশ থেকেই পানির চাপ থাকে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার উঠলেই ইউনিয়নের মানুষ ভীতির মধ্যে থাকে। এরপরও নেবুবুনিয়া, গাবুরা, নাপিতখালি, চকবারা, কালীবাড়ি, জেলেখালি ও দৃষ্টিনন্দন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ইউনিয়ন টিতে ১৫ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রত্যেকটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে সাধারণ মানুষ দ্রæত আশ্রায়ন প্রকল্পে যেতে পারে সেজন্য দুর্যোগ প্রমোশন মিটিং হয়েছে। বেড়িবাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম জানান, দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করেছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কম্পার্টমেন্ট-৩ এর ১০.৫ কিলোমিটার বেডড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেছে। একটা প্যাকেজের কাজ শুরু হয়েছে। আগের তুলনায় বেড়িবাঁধের অবস্থা এখন ভালো বলে জানালেন তিনি। 8,415,386 total views, 3,539 views today |
|
|
|