জুন ১৫, ২০২০
পাটকেলঘাটা বাজারের অধিকাংশ রাস্তাগুলির বেহাল দশা
নাজমুল হক, পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : পাটকেলঘাটা বাজারের রাস্তাগুলোর বিভিন্ন জায়গায় খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। ফলে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে জনসাধারণ। রাস্তাগুলির এ বেহাল দশার যেন দেখার কেউ নাই, এমনটাই বক্তব্য স্থানীয়দের। সোমবার (১৫ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, পাটকেলঘাটার বাজারের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ মজুমদার ফিলিং স্টেশনের পিছনের দুই রাস্তার সংযোগ স্থলে রাস্তাটি ভেঙে বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ওই জায়গায় প্রতিদিন উল্টে পড়ছে বিভিন্ন যানবাহন। মালবাহী পরিবহণ তো দূরের কথা একটি বাইসাইকেল, মটর সাইকেল, ইজিবাইক, ইঞ্জিন ভ্যানও এ রাস্তা দিয়ে পার হতে গেলে অপরের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। প্রায় দেখা যায় ভারী যানবাহনগুলো গর্তের ভিতর হাঁটু পর্যন্ত কাদা পানির মধ্যে ডুবে যাওয়ায় প্রায় সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। নিয়মিত এ রাস্তায় চলাচল কারী লাল্টু হোসেন ও চা বিক্রেতা আক্কাস আলী বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটি ভেঙে এমন খানা খন্দে পরিণত হয়েছে যে রাস্তাটি পার হওয়ার সময় জামাকাপড়ে কাদামাটি লেগে যায়। তাছাড়া প্রায় দেখি দু’একটা যানবাহন উল্টে পড়ে আছে’। অন্যদিকে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের রাস্তাটি অল্প পানিতেই তলিয়ে যায়। রাস্তার অনেক জায়গায় ইট বালি উঠে গিয়ে খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। ক্রেতা সাধারণ এ রাস্তায় চলতে অনিহা দেখায় ফলে রাস্তার দু’ধারে ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ীরা দারুণ বিপাকে পড়েছে। ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ী হাসানুর রহমান বলেন, ‘রাস্তার এ বেহাল দশায় ক্রেতা সাধারণ রাস্তায় চলাচল কম করার কারণে আমাদের বেচা কেনা অনেক কম হচ্ছে। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালাতে না পারায় অনেক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক দ্বিধা দ্ব›েদ্বর কারণে এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে’। পাটকেলঘাটা খাদ্য গুদাম রোডটি বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই কোন কোন জায়গায় খানা খন্দের ভিতর জমে থাকা ঘোলা কাঁদা পানিতে পথচারীদের জামা কাপড় নষ্ট হয়। এদিকে পাটকেলঘাটার হাই স্কুল রোডের পুরোনো পোস্ট অফিসের সামনে কয়েকটি জায়গায় পিচ, ইট, বালি উঠে গিয়ে এমন গর্তে পরিণত হয়েছে রাস্তাটুকু পার হতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারীদের। একবার এ রাস্তায় কেউ আসলে দ্বিতীয়বার এ রাস্তায় ফিরতে চাইবে না। এ রাস্তার পাশের এক ব্যবসায়ী মাসুদ কবির বলেন, ‘রাস্তাটি এমন বেহাল দশা ও খানাখন্দে পরিণত হয়েছে যে, প্রতিদিন দু’একটা যানবাহন এ রাস্তায় পাল্টি খায় এবং ঘোলা কাঁদা পানি এতই জমে থাকে প্রতিদিন গাড়ি চলাচলের সময় আমার ঘরে ঘোলা কাঁদা পানি ছিটকে উঠে’। এছাড়া পাটকেলঘাটা টাওয়ার রোডটি অল্প বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়, যেন নৌকা দিয়ে পার হওয়ার মত উপক্রম হয়। এ রাস্তার বেহাল দশার কারণে দু’ধারে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা বিপাকের মধ্যে আছে। এ রাস্তার এক বস্ত্র ব্যবসায়ী তামান্না গার্মেন্টস এর মালিক আ: হালিম জানান, ‘রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যের দারুণ মন্দা হওয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেও অনেক ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত উঠেছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু পানি জমে থাকে এবং গাড়ি চলাচলের সময় ঘোলা কাদা পানি ঘরের ভিতর ঢুকে নাস্তানাবুদ অবস্থায় পরিণত হয়। এভাবে পাটকেলঘাটার কালীবাড়ি রোড, ডাকবাংলো রোড, গরুহাটা রোড, বলফিল্ড রোড, মজুমদারের গুদাম রোড, পুলিশ ফাঁড়ির রোড সহ পাটকেলঘাটার প্রায় রোডগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। ফলে ভোগান্তি পাচ্ছে এলাকাবাসী’। রাস্তাঘাটের এ বেহাল চিত্র এবং পানির ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিষ্কাশনের সমস্যার বিষয় নিয়ে পাটকেলঘাটার সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন জুন মাস কেøাজিংয়ের মাস আমাদের হাতে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। জেলা পরিষদের রাস্তাগুলো আমাদের কিছু করার নেই। তবে কয়েকটি ইটের ভাটার মালিককে কিছু আধলা ইট দিতে বলেছি খানা খন্দ পূরণ করার জন্য। কিন্তু না দিলে আমার কিছু করার নাই’। 8,576,171 total views, 3,941 views today |
|
|
|