জুন ১৪, ২০২০
উৎকণ্ঠা নিয়ে বেঁড়িবাঁধেই ২৪ দিন: দ্রুত টেঁকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি শ্রীউলার পানিবন্দি মানুষের
মনিরুল ইসলাম, শ্রীউলা (আশাশুনি) প্রতিনিধি : প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নে খোলপেটুয়া নদীর বেড়ি বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষের দিন কাটছে চরম হতাশা আর উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়। ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও হাজরাখালির মূল বাঁধ অথবা রিং বাঁধ এখনও কোনটাই বাঁধা সম্ভব হয়নি। কবে বাঁধ হবে, কীভাবে হবে, বর্ষা মৌসুমের মধ্যে আদৌ হবে কি না এ জল্পনা কল্পনা এখন গোটা ইউনিয়নবাসীর। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে শ্রীউলা ইউনিয়নের ৫ টি পয়েন্টে বেড়ি বাঁধ ভেঙে ইউনিয়নের ২২ গ্রামের মধ্যে ২০টি প্লাবিত হয়। ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিলের নেতৃত্বে এরমধ্যে ৪টি প্রাথমিক ভাবে আটকানো সম্ভব হয়েছে। আম্পানের ধ্বংসাত্মক থাবায় নদীর বাঁধ ভেঙে শ্রীউলা ও প্রতাপনগরের হাজার হাজার মানুষ তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে সাইক্লোন শেল্টার, স্কুল, মাদ্রাসায় বা জোড়াতালির পলিথিনের নীচে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা পাউবোর রাস্তায় কুঁড়ে বানিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হল হাজরাখালী বাঁধটি কবে আটকাতে পারবে। কবে তারা তাদের নিজ বসত বাড়িতে ফিরতে পারবেন। হাজরাখালির ভয়াবহ বেড়ি বাঁধটি অতিদ্রæত মেরামত এখন শ্রীউলা ইউনিয়নবাসীর গণ দাবিতে পরিণত হয়েছে। প্রতাপনগরের কোলা খেয়াঘাট থেকে শুরু করে হিজলিয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৪ কি.মি. ও শ্রীউলার হাজরাখালি, থানাঘাটা গ্রামের প্রায় ৩ কি.মি. বেড়ি বাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে গত ২০ বছরে প্রায় ২০ বার ভেঙেছে। শ্রীউলা যতবার নদী ভাঙনে প্লাবিত হয়েছে ততবার ইউপি চেয়ারম্যান সাকিল মানুষের জানমাল রক্ষা করতে নদীর বাঁধ মেরামত করতে ছুটে গেছেন এবং প্রতিবারই সফল হয়েছেন। শুধু তাই না বাঁধ আটকানোর অভিজ্ঞতা থাকায় তিনি প্রতাপনগরের কোলা, হিজলিয়া বাঁধও একাধিকবার মেরামত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তবে আম্পানের মত ক্ষতি শ্রীউলা ইউনিয়নে গত ২০ বছরে কখনো হয়নি। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউপি চেয়ারম্যান সাকিল এ প্রতিবেদককে জানান, ‘গত ২০ বছরে কমপক্ষে ২০ বার এসব বেড়ি বাঁধ ভেঙেছে আমি আমার সাধ্য মত জনগণের জানমাল রক্ষা করেছি। এবার আম্পানে আমার ইউনিয়নে ৫টি পয়েন্টে বেড়ি বাঁধ ভেঙে কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমার ইউনিয়নের মানুষ তিন বেলা খেতে পারছে না। সরকারি ও বেসরকারিভাবে যে অনুদান আসে তা আমি বিপদগ্রস্ত সব মানুষের দিতে পারছি না। হাজরাখালি বাঁধটি বাদে সব কয়টি বাঁধ ইউনিয়ন বাসীকে সাথে নিয়ে আপাতত আটকাতে পেরেছি। আসছে গোনের আগে হাজরাখালী বাঁধটি আটকাতে না পারলে আমার ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ আরও বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়বে। তিনি বানভাসি মানুষের পক্ষে অতিদ্রæত হাজরাখালি বাঁধটি আটকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 8,952,739 total views, 8,489 views today |
|
|
|