Site icon suprovatsatkhira.com

ভেঙে পড়েছে আশাশুনির বাঁকড়া কালভার্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির শোভনালী ইউনিয়নের মরিচ্চাপ নদী উপর নির্মিত বাঁকড়া কালভার্ট ভেঙে পানির সাথে মিশে যাওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা। ভাটার সময় কিছুটা জেগে থাকলেও জোয়ারের সময় সেতুর উপরে ৫/৬ ফুট পানি ওঠায় যাতায়াতে ভোগান্তির সীমা থাকে না।
বুধবার দুপুর ১ টায় দিকে সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, সেতুটি একদম পানির সাথে মিশে আছে। সেতুর উপরে প্রায় চার থেকে পাঁচ ফুট পানি। সেখানে কয়েকজন অর্থের বিনিময়ে দুপাশ থেকে আসা মানুষের মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল পারাপার করে দিচ্ছে। আর পথচারীদের হাত ধরে সেতুর হাতার উপর দিয়ে হাঁটিয়ে পার করছে।
কিছু সময়ের মধ্যে কুন্দুড়িয়া হাইস্কুলের ছুটি হয়, প্রায় পঞ্চাশের উপরে ছাত্রছাত্রীরা সেতুর মুখে এসে দাড়ায়। সেখানে পানির ভেতরে দশ টাকার বিনিময়ে তাদের সাইকেল পার করে দিচ্ছে স্থানীয় রহিম ও করিম সহ কয়েকজন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৬— ২০১৭ অর্থ বছরে ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয় বরাদ্দে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাইকগাছার মেসার্স জিএম হাসিব ট্রেডার্স কাজটি বাস্তবায়ন করেন।
২০২১-২২ অর্থ বছরে মরিচ্চাপ নদী খননের ফলে কালভার্টের মাঝ বরাবর অংশ বসে গেলে ব্রিজের বড় অংশ ভেঙে যায়। প্রায় এক বছর ধরে এর উপর দিয়েই শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা চলাচল করেছে। কিন্তু জোয়ার ভাটার ফলে নীচের মাটি সরে কালভার্টটি আরও নীচে দেবে যাওয়ায় জোয়ারের সময় এর উপর ৫/৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এসময় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের পারাপার হতে হয়। পাশ্ববর্তী কামালকাটি কালভার্টটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় কুন্দুড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম জানান, নদী খননের পর কালভার্ট দুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ওপার থেকে প্রায় ২শতাধিক ছেলে মেয়ে আমার এখানে পড়াশোনা করে। যাতায়াত ব্যবস্থার কারনে স্কুলে উপস্থিতির হার কমে গেছে। এতে তাদের পড়াশোনার খুব ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, নদীটি দীর্ঘকাল পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেলে খেয়া পারাপারসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে এবং এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মরিচ্চাপ নদীতে কালভার্ট নির্মাণ করা হলে ভালোভাবেই নদী পারাপারের কাজ চলে আসছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খননের সময় নীচের মাটি অপসারণের কারণে কালভার্টটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে বসে গেছে।
আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্য দেব সরকার বলেন, মরা নদীতে বাঁকড়া কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। নদী খননের ফলে সেটি ভেঙে পড়েছে। এ বিষয়ে আমরা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে বলেছি যাতে দ্রুত সময়ে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় বলেন কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় মানুষ অত্যন্ত দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক স্যারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি যাতে দ্রুত সময়ে মানুষের ভোগান্তি দূর করা যায়।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন —১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ সালাউদ্দীন জানান, ২০২০—২১ অর্থ বছরে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে সাতক্ষীরা মরিচ্চাপ নদীর পুনঃ খনন কাজ শুরু করে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোড। সম্পুর্ন দৈর্ঘ্যে ডিজাইন মোতাবেক পূর্ণ প্রশস্ততায় পুনঃখনন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হলেও, কালভার্ট থাকার কারণে সেখানে নদী সংকুচিত অবস্থায় থেকে যায়। চলমান বর্ষায় ভারী বৃষ্টিপাতে নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির প্রচন্ড চাপে কালভার্ট ধ্বসে যাওয়ার কারণে পানির প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version