* দেবহাটায় একেরপর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।
* ছোটখাটো চোর আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাহিরে মূল হোতারা।
* চুরি ডাকাতি কমাতে উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট নয় অভিযোগ ভ‚ক্তভোগীদের।
* চুরি-ডাকাতি কমাতে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি।
মীর খায়রুল আলম: চেতনা নাশক দিয়ে পুরো পরিবারকে অচেতন করে চুরির পর এবার অস্ত্রের মুখে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে দেবহাটায়। বাসাবাড়ি, দোকানে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। পুলিশ অপরাধীদের ধরার জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভ‚ক্তভোগীরা।
এদিকে, শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের ঘটে। এঘটনায় বাদি হয়ে জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত নকুল চন্দ্র ঘোষের ছেলে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা পুজা উৎযাপন কমিরি সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষ (৬২) দেবহাটা থানায় এজাহার দায়ের করেছেন।
ভ‚ক্তভোগী যোগেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, রাত ২টার দিকে আমার স্ত্রী বাথরুম খেকে রুমে এসে দরজা দিতে যাবে তখনই হঠাৎ কয়েকজন লোক আমাদের বাড়ির গেটের তালা কেটে অস্ত্র হাতে নিয়ে ৫/৬ ভিতরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে আমার ঘরে ঢুকে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে। তারা বলে আমরা থানা থেকে এসেছি, তোদের কোন ক্ষতি করব না কোথায় কি আছে বের কর। এরপর বড়ভাই সুভাষ চন্দ্রের রুমে নিয়ে যেতে বলে। রুম থেকে বেড়িয়ে ২য় তলায় ওঠার সময় শব্দ পেয়ে আমার আরেক ভাই প্রভাষের স্ত্রী বিজলী ঘোষকে নিয়ে ২য় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমাদের হাত ও চোখ বেঁধে লুট করতে শুরু করে। যাওয়ার সময় তারা আমার মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে যায়।
সুভাষ চন্দ্র ঘোষ জানান, রাত ২ থেকে ৪টা পর্যন্ত একটি ডাকাত দল আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করেছে। তারা আমাদের ৪ ভাইয়ের ঘর থেকে স্বর্ণলঙ্কার, মোবাইল, নগদ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, ব্যাংকের চেক বই, পাসপোর্ট সহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া আমার ভাইপো সৌরভ (বিটু) ঘর থেকে লাইসেন্সকৃত বন্দুক নিয়ে যায় তারা। তিনি আরো জানান, ডাকাতরা সাতক্ষীরা জেলার চলতি ভাষায় কথা বলছিল। তাদের কিছুজনের মুখ খোলা ছিল, কয়েক জনের মুখ বাধা ছিল।
এঘটনার পর সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তা, দেবহাটা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও দেবহাটা থানা পুলিশের ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে, শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাতে পারুলিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বানু আল কাদেরীর বাড়ি থেকে পানি উত্তোলনের মটর চুুরি হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের ৭ ফেব্রæয়ারীতে পারুলিয়ায় একরাতে ৪টি দোকানে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়। এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ সখিপুরের বাসিন্দা ইংরেজি শিক্ষক এবাদুল ইসলামের বাড়ি হতে ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪টি ডায়মন্ডের সহ ১৪টি নাকফুল, ৭ জোড়া নুপুর এবং নগদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা লুটে নিয়ে যায়। এছাড়া বিভিন্ন ছোটবড় চুরির ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। এসব অপরাধ ঘটলেও দুএকজন পাতিচোর আটক হলেও মুলহোতারা ধরাছোয়ার বাহিরে রয়েছে বলে অভিযোগ ভ‚ক্তভোগীদের।
দেবহাটা উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ জানান, উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিমাসে মাসিক সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বিশেষ করে চুরি সহ বিভিন্ন অপরাধ কমাতে রাত ১০ টার পর বিভিন্ন এলাকার কেরামবোর্ড খেলা, চায়ের দোকান বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এছাড়া রাতে বিভিন্ন এলাকায় অচেনা মানুষের আনগোনা দেখলে সে বিষয়ে প্রশাসনকে তথ্য দিলে গেলে চুরি-ডাকাতির মত অপরাধ অনেক অংশে কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ মাহমুদ হোসেন জানান, একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ১০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। পুলিশ এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।