Site icon suprovatsatkhira.com

দেবহাটায় লুটকৃত অস্ত্র ফেরত দিল ডাকাতরা: আটক হয়নি কোন আসামী

মীর খায়রুল আলম: দেবহাটার জগন্নাথপুরের মুক্তিযোদ্ধা সহ ৪ পরিবারে ডাকাতির ঘটনায় ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন আসামী আটক করতে পারেনি পুলিশ। অপরদিকে ডাকাতির পরদিন পুলিশ ও গোয়েন্দা পাহারার মধ্যে বাড়ির বাহিরে লুটকৃত অস্ত্র ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যা রীতিমত এলাকায় ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সংঘবদ্ধ ভাবে গত শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত নকুল চন্দ্র ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষ (৬২) বাদি হয়ে দেবহাটা থানায় এজাহার দায়ের করলে পরে তা মামলা রেকার্ড হয়। বাড়ির লোকজন ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের ২/১ জনকে আংশিক চিনতে পারলেও সনাক্ত করতে পারেনি তারা। তবে ঘটনার দিন রাতে শরৎ চন্দ্র ঘোষের ছেলে সৌরভ কুমার ঘোষ গভীর রাত পর্যন্ত খেলা দেখছিলেন নিজ ঘরে। এরপর তিনি খেলা দেখে শুয়ে পড়ার কিছুপর পরই ডাকাতরা বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে যোগেষ ঘোষের ঘরে এরপর সুভাষ চন্দ্রের ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রধারীরা। বাড়ির লোকদের জিম্মি করে ধারাবাহিক ভাবে তারা একের পর এক ১১টা ঘরে লুট করে তারা। ২ঘন্টা লুটের পর ওই বাড়ি ছাড়ে দস্যুরা। এসময় ডাকাতরা ওই বাড়ি থেকে প্রায় ২৭ ভরি স্বর্ণলঙ্কার, ৬ লাখ টাকা, লাইসেন্সকৃত দুই নালা বন্দুক ও একটি মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়। দীর্ঘসময় সেখানে অপেক্ষাকালে ডাকাতিতে জড়িতরা বাড়ির লোকদের জিম্মি করার পাশাপাশি তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। অপরদিকে, ঘটনার দীর্ঘ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডাকাতি হওয়া অস্ত্র ওই বাড়ি থেকে পরিত্যক্ত ভাবে উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। শরৎ ঘোষের নামে লাইসেন্সকৃত বন্দুক তার ছেলে সৌরভ ঘোষের ঘর থেকে লুট হয়। পরদিন সকালে সৌরভ তার ঘরের পাশে ওই অস্ত্র দেখে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পুলিশকে অতিবাহিত করে। পরে পুলিশ অস্ত্রটি উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। তবে ডাকাতির পর ওই বাড়ি সহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক নজরদারি বসায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের এই নজরদারির মধ্যে কিভাবে লুট হওয়া অস্ত্র ওই বাড়ির পাশে কে বা কারা ফেলে গেলে সেটিও প্রশ্ন? পাশাপাশি ওই বাড়িতে যখন ডাকাতরা প্রবেশে করতে প্রথমে প্রাচীরের গেট পরে ভবনের গেটের তালা কাটে তারা। ডাকাতরা যখন ওই বাড়িতে প্রবেশ করে লুট করতে থাকে তখন তারা বাড়িতে ঢুকে সিগারেট খেয়ে বাকি অংশ ফেলে যায়। সেই সাথে তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট বিভিন্ন স্থানে রেখে যাওয়া এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই রাতের মোবাইল নেটওয়ার্কে সন্ধেহভাজন ব্যক্তিদের নজরে আনতে পারলে সহজে অপরাধীদের সনাক্ত করা যাবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
এদিকে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষ জানান, ঘটনার দিন কোন কিছু বোঝার আগে অস্ত্র নিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করে বাড়ির সবকিছু লুট করে। চোখের সামনে সবকিছু লুট করতে থাকলেও চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না। প্রায় ২ ঘন্টার মত সময় ধরে তারা আমাদের বাড়িতে ছিল। একটার পর একটা ঘরে লুট করে তারা। আমাদের পরিবারের দীর্ঘদিনের অর্জিত স্বর্ণলঙ্কার, নগদ টাকা, মুল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিয়ে চলে গেছে ডাকাতরা। এখন আমাদের পুলিশের তদন্তের উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ মাহমুদ হোসেন জানান, শনিবার ভোরে সুভাষ ঘোষের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত গোলার পাশ থেকে লুট হওয়া বন্দুকটি উদ্ধার হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ঘটনা জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version