নিজস্ব প্রতিনিধি : গত ২১ মে অনুষ্ঠিত তালা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতিপক্ষের কর্মী ও সমর্থকদের উপর এই গ্যাং দফায় দফায় হামলা, ভাংচুর ও হুমকি প্রদান করছে। গত প্রায় ১০দিন ধরে তাদের অব্যাহত মহড়ার কারনে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ক্ষমতাসিন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদ-পদবীতে থাকা কতিপয় উঠতি বয়সের কিশোর-যুবকরা সংঘবদ্ধভাবে নির্বাচনের দিন রাত থেকে থেকে এলাকায় ত্রাসের মহড়া শুরু করেছে। প্রতিটি গ্যাং এর ১০ থেকে ১৫জন সদস্য মটরসাইকেল নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নির্বাচনের প্রতিপক্ষের কর্মী এবং সমর্থকদের হুমকি প্রদান সহ হামলা ও ভাংচুর করছে। কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামে মহড়া শেষে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা খাইরুল ইসলামের উপর হামলা করে। হামলায় তিনি সহ তার পক্ষের কয়েকজন নির্বাচনী কর্মী আহত হন। এসময় তার ব্যবহৃত মটরসাইকেলটি ভাংচুর করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। এছাড়া, উপজেলার মেশারডাঙ্গা এবং সোনাবাঁধাল, কলাগাছি গ্রামের সোনাতন ধর্মালম্বীর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ যারা এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা ও পরাজীত এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের প্রতিনিয়ত নানাবিধ হুমকি প্রদান করছে। তাদের হুমকিরমূখে এলাকাগুলোতে আতংক বিরাজ করছে। মাদরা গ্রামের একাধিক ব্যক্তির উপর হামলা, বাড়ি-ঘর ভাংচুর এবং বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা তালা থানায় বারবার অভিযোগ দায়ের করছে এবং প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নির্বাচনের আগে উপজেলার শুকদেরপুর গ্রামের মো. পীর আলী সরদারের পুত্র ব্যবসায়ী এস. এম. আব্দুল হামিদ এর উপর হামলা চালায় কিশোর গ্যাং। ৪টি মটরসাইকেলে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা এসে আকস্মিক ভাবে আব্দুল হামিদকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর আহত আব্দুল হামিদকে তালা হাসপাতালে আনার পর এখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। বর্তমানে আব্দুল হামিদ এখানে চিকিৎসাধিন রয়েছে। এঘটনায় গত ১৮ মে তালা থানায় একটি মামলা (০৬/২৪) দায়ের হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২জন কিশোরকে আটক করে। কিশোর গ্যাং এর হামলায় আব্দুল হামিদ থানায় মামলা করতে পারলেও অন্য অনেকেই হুমকির মুখে মামলা করতে সাহস পায়নি। তবে, কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ ও জিডি করেছেন বলে জানা গেছে।
এব্যপারে জানতে চাইলে তালা থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সংক্রান্তে যেখানেই ঘটনার সংবাদ পেয়েছি সেখানেই দ্রæত ব্যবস্থা নিয়েছি। হুমকি বা হামলার ঘটনা সংক্রান্তে এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ মামলা বা জিডি করেনি। বর্তমানে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুকদেবপুরের ঘটনাটি ব্যবসায়ীক দ্ব›দ্ব সংক্রান্ত। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হলে ২জনকে আটক করা হয়।
তালায় হামলা, ভাংচুর, হুমকিতে এলাকায় আতঙ্ক
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/