Site icon suprovatsatkhira.com

শ্যামনগরে আইওটি ডিভাইজ উন্নয়ন এবং চিংড়ি চাষে এর সফল প্রয়োগ শীর্ষক কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিনিধি:সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আইওটি ডিভাইজ উন্নয়ন এবং চিংড়ি চাষে এর সফল প্রয়োগ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুশীলন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট (১ম সংশোধিত) এর অর্থায়নে “আইওটি বেজড স্মার্ট এ্যকুয়াকালচার ফর শ্রিম্প কালচার টেকনোলজি ইনোভেশন, পাইলটিং এন্ড কর্মাশিয়ালাইজেশন” শীর্ষক সাব প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট পরিচালক মোহাম্মদ জিয়া হায়দার চৌধুরী।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. নির্মল চন্দ্র রায়, প্রকল্পের কো-পিআই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রফেসর রশিদুল হাসান।

কর্মশালায় আরো বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট এর উপ-প্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি।

মৎস্য অধিদপ্তর ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিগণ এবং অত্র এলাকার চিংড়িচাষীগণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্যখাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান একজন দূরদর্শী নেতা হিসেবে ৪ জুলাই ১৯৭২ সালে কুমিল্লার এক জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন, মাছ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। বঙ্গবন্ধুর সেই বাণী বাংলাদেশে আজ বাস্তব রূপ নিয়েছে। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আমরা যদি আমাদের অর্থনীতির ভিতকে আরও শক্তিশালী করতে চাই তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কম জায়গায় বেশি মাছ উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই।

তৎপ্রেক্ষিতে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চিন্তা মাথায় নিয়ে আইওটি-বেজড স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার ও এর উৎকর্ষতা চাষী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। আর সেই বাস্তবতার নিরিখে চিংড়িচাষীদের মাঝে এই নতুন প্রযুক্তির প্রসার চিংড়িচাষের ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সুচনা।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিংড়ি শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। চিংড়ি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী সম্পদ। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ ও মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে চিংড়ি সম্পদের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত। বাংলাদেশে মূলত দক্ষিনাঞ্চলে তথা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা ও কক্সবাজার জেলায় চিংড়ি চাষ হচ্ছে।
স্বাধীনতা উত্তরকালে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে চিংড়ি রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ চাষক্ষেত্র থেকে প্রায় ৪,০০০ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদনের মাধ্যমে এর জয়যাত্রা শুরু করে, যা বর্তমানে ২০২১-২০২২ সালে ২,৫১,৯৬৪ মে. টন এ উন্নীত হয়েছে।
চিংড়ি সাদা সোনা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের রপ্তানী বাণিজ্যে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের অবদান ১.২৪%, যার সিংহভাগই চিংড়ির অবদান। উল্লেখ্য, রপ্তানীযোগ্য খাদ্যপণ্যের মধ্যে চিংড়ির অবস্থান সবার শীর্ষে। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে বর্তমান বিশ্বেচিংড়ি সমাদৃত এবং সারা বিশ্বে চিংড়ি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করায় আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে সারা বিশ্বে চিংড়ির উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে আশির দশকে ক্ষুদ্র পরিসরে চিংড়ি চাষ শুরু হয়ে বিগত তিন দশকে চিংড়ি চাষ এলাকা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হলেও আশানুরূপ উৎপাদন হচ্ছে না। মূলত এখনও এদেশে সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ির চাষ হচ্ছে।
গত অর্থবছরে (২০২১-২২) উপকূলীয় বাগদা চিংড়ি খামারের আয়তন প্রায় ১,৯১,০৫৭ হেক্টর এবং উৎপাদিত বাগদা চিংড়ির পরিমাণ ৭০,২১৯ মে.টন। গলদা খামারের আয়তন ৭১,৯২৩ হেক্টর এবং উৎপাদন ৫৪,৩৫২ মে.টন। বর্তমানে চাষকৃত ও প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে সর্বমোট ২৬১,১৫৪ মে.টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version