সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের ১০ হাজার বিঘা জমির জলাবদ্ধতা নিরসন ও কৃষি জমিতে লবনাক্ততা হ্রাসের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি খাল উন্মুক্তকরণের আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত আবেদন করেছেন নদী ও খাল সুরক্ষা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ মÐল।
লিখিত আবেদনে জানা গেছে, গত আষাঢ় মাস থেকে অদ্যাবধি আশাশুনির খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমি অতি বর্ষণে প্লাবিত হয়ে আছে। এতে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। পলি ভরাটের কারণে এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম কালকি ¯øুইসগেটের পানি সরবরাহ বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পলি অপসারণে সরকারি পদক্ষেপ গ্রহন করা হলেও তার সুফল পেতে আরো কয়েক বছর লেগে যাবে। যার ফলে জলাবদ্ধতায় এলাকার প্রান্তিক ও বর্গাচাষীরা চাষাবাদ বন্ধ করে রুটি- রুজির চিন্তায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গত বর্ষায় এলাকার রাস্তাঘাট ও কাঁচা ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় গ্রামের পর গ্রামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কালকি ¯øুইসগেটের পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট চেউটিয়া নদী, পবনার খাল ও দেয়াবর্ষিয়া খাল দিয়ে এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। কিন্তু ইজারা গ্রহীতারা খাল ৩টিতে নেটপাটা ও বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় না।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকালে উক্ত খালগুলো উন্মুক্ত করণের দাবিতে পশ্চিম খালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন চেউটিয়া টু খাজরা সড়কে সহস্রাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সমবেত হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন এবং সম্মিলিত নদী ও খাল সুরক্ষা কমিটি গঠন করেন। খালের ইজারা গ্রহীতারা ও হাতে গোনা চিংড়ি চাষীরা খাল দিয়ে খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের লোনা পানি উত্তোলন করার ফলে এলাকার সবুজ বেষ্টনী ও জীব বৈচিত্র ধ্বংসের পথে। খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের প্রায় ১০টি মৌজার জমিতে আমন ধানের চাষ, বসতবাড়িতে শাক-সবজি চাষ সহ গাছ গাছালির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। উক্ত খালগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হলে হাজার হাজার বিঘার আমন ধানের ফসল, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এর কোন ব্যত্যয় ঘটলে অতিবৃষ্টির ফলে গত বছরের মতো এবারও এই অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার বিঘার আমন ধানের চাষ সম্পূর্ণরুপে ব্যাহত হবে। তাই জনস্বার্থে উল্লেখিত খাল তিনটি উন্মুক্ত করতে এলাকার দরিদ্র কৃষিজীবী মানুষের পাশে দাঁড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
আশাশুনির খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসন ও কৃষি জমিতে লবনাক্ততা হ্রাসে সংশ্লিষ্ট খাল উন্মুক্তের দাবি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/