নিজস্ব প্রতিনিধি : ‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’: “আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক বিনিয়োগ করো; জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ কর; নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কর” দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট করেছে সিডো সংস্থা পরিচালিত সাতক্ষীরার এক্টিভিস্টা সদস্যরা। সংস্থার প্লাটফর্ম একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সামনে এ জলবায়ু ধর্মঘটের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় তরূণ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
যুবরা সরকারী পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলো এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে টেকসই প্রকল্প এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানায়। জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবি ও জনগণকে সচেতন করতে একশনএইড বাংলাদেশের সহায়তায় ও এক্টিভিস্টা নেটওয়ার্কের যুব সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক তরূণরা এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন। এসময় তরূণরা দলমত নির্বিশেষে সমাজে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাথে নিয়ে জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবিতে ফেস্টুন হাতে অবস্থান নেয়। তাদের প্লাকার্ডে তাদের প্রতিবাদের অক্ষরে লিখা দাবি জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ কর; নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কর, জলবায়ু সুবিচার চাই, ইত্যাদি প্রকাশ পায়।
এছাড়াও যুবরা বলেন, উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে, তাদের বন্য ঔপনিবেশিক শোষণ, যুদ্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। পুঁজিবাদী মানসিকতা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে মূলত দক্ষিণের জলবায়ু সংরক্ষিত দেশগুলোতে। এটি অনুন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায়ের কাছে তাদের পরিবেশগত ঋণ বহু-গুন বাড়িয়ে তুলছে। আমরা বাংলাদেশের তরূণরা তাই সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দেশগুলির কাচে অবিলম্বে জীবাশ্ম তহবিল বন্ধ করাসহ জলবায়ু সংকটের কারণে ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়গুলির জন্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ এ অর্থায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে জীবাশ্ম জ্বালানির কোম্পানি ও বাণিজ্যিক কৃষির মত ক্ষতিকারক এরিয়াগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
জলবায়ু বিষয়ে জনগণ ও নীতিনির্ধারকদের সু-বিবেচনার জন্য স্ট্রাইকের বিকল্প নেই বলে জানান, একজন তরূণ এক্টিভিস্টা ও জলবায়ুকর্মীরা বলেন, প্রতিবছর উপক‚লীয় অঞ্চলে পানি বাড়ছে এবং আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যতে প্রজন্ম ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা বাঞ্ছনীয়। যত তাড়াতাড়ি আমাদের বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ এই কাজ করবে তত তাড়াতাড়ি এ পৃথিবী সুরক্ষিত হবে। সারা পৃথিবী যে হাবে জীবাশ্ম জ্বালানিতে ও ব্যবসায়িক কৃষি পণ্যে বিনিয়োগ বেড়ে চলছে তা ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নমূলক পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে একটি বিরাট অন্তরায়। ফলে বাংলাদেশের তরূণরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জলবায়ু সহিষ্ণু টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু প্রশমন তহবিলের দাবি করছে। ফসিল ফাইন্যান্স ও ক্ষতিকর ব্যবসায়িক কৃষি পণ্যতে বিনিয়োগ প্রবণতা ক্রমবর্ধমান পুঁজিবাদী মানসিকতার একটি প্রধান উদাহরণ যেখানে মানুষের চেয়ে মুনাফাই মুখ্য। এটি পৃথিবীতে বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে ধ্বংস করছে। ফলে বিরুপ প্রভাব পড়ছে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর উপর। এর ফলে অতি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নারী ও যুবসহ বিপদাপন্ন গ্রুপগুলো। আমরা যদি এখনই সোচ্চার না হই তবে নিকট ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় দুর্যোগ ও বিপর্যায়ের সম্মুখীন হতে হবে, বাস্তুচ্যুত হতে হবে আমাদের মত দেশগুলির লক্ষাধিক মানুষকে।