ফারুক হুসাইন রাজ: মোবাইল নিয়ে বিরোধের জেরে ট্রাকের হেল্পার রানা তার সহকর্মী মনিরুল ইসলামকে গলির মধ্যে ডেকে নিয়ে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে জখম করে। এ ঘটনার ৮ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে মনিরুল ইসলাম (১৯) নামের ওই যুবক। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে প্রধান আসামী ট্রাক হেল্পার রানার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামী করে গত শুক্রবার ২ জুন রাত ৯ টার দিকে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের মা ফাতেমা খাতুন।
নিহত যুবক মনিরুল ইসলাম (১৯) কলারোয়া পৌর সদরের গদখালি গ্রামের ফাতেমা খাতুন ও মৃত জাকির হোসেনের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর পেশা হিসেবে মনিরুল ইসলাম সাতক্ষীরায় ট্রাকের হেল্পার হিসেবে কাজ করত। অভিযুক্ত প্রধান আসামি কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরা দক্ষিণ গ্রামের মিন্টুর ছেলে রানা। রানা পেশায় ট্রাকের হেল্পার।
রানা ও মনিরুল ইসলাম দুইজন একই পেশায় কর্মরত থাকায় তাদের ভিতরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল বলে জানায় গদখালি গ্রামের নাজমা বেগম। তিনি আরো বলেন, ট্রাক হেলপার রানা উশৃঙ্খল প্রকৃতির এলাকার ভিতরে আতঙ্ক তৈরি করতো গ্রামের কেউ শান্তিতে বসবাস করতে পারত না তার জন্য। রানাসহ এই হত্যাকাÐের সাথে জড়িত সকলের শাস্তি চান নিহতের মা। ফাতেমা খাতুন বলেন, মনিরুলকে জখম করার আগে তার ব্যবহৃত মোবাইল নিয়ে নেয় সন্ত্রাসী রানা। মোবাইল ফেরত চাইলে তাকে কৌশলে গত ৩১ মে বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কলারোয়া সরকারি হাসপাতালের পূর্ব সীমানা প্রাচীরের গলির ভেতরে ডেকে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে মাথার ভেতরে রক্ত জমে মাথা ফুলে যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করে রানাসহ তার সহযোগী কিশোর গ্যাং এর চক্র। আমার একমাত্র সম্বল আমার ছেলেকে আজ ওরা পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করেছি এই হত্যাকারীদের যদি বিচার না হয় তাহলে আমার সন্তানের মত আরো অনেক মায়ের কোল খালি করবে এই সন্ত্রাস চক্র।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা যায় মনিরুলকে এমন কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় মাথার গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেতলে ফুলে যায়। মাথায় অতিরিক্ত আঘাত হওয়ার কারণে তার মাথার ভেতরে অতিরিক্ত পরিমাণে রক্ত জমাট বেধে ছিল। তাকে সাতক্ষীরায় রেফার্ড করা হয় পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
কলারোয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনার পর মনিরুল ইসলামের মা ফাতেমা খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। প্রধান আসামি রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামীদের নিয়ে তদন্ত চলছে। ময়না তদন্তের পর মৃতদেহটি দাফনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কলারোয়ায় গলির মধ্যে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে জখম ৮ দিন পর মৃত্যু
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/