নিজস্ব প্রতিনিধি : পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যবসা-বানিজ্য। বেড়েছে জেলার আমসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহনের চাপ। কোলকাতা থেকে কম দূরত্বের হওয়ায় ভোমরা স্থলবন্দরের বেড়েছে সম্ভাবনা। ভোমরা স্থলবন্দরকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দরের উপর চাপ কমবে বলে মনে করেন অনেকেই। সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ভোমরা স্থলবন্দরে প্রতি কর্মদিবসে প্রায় ১০০টি আমদানি ট্রাক বেশি ঢুকছে। আর ২০২২ সালের মে মাসে যেখানে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা, অন্যদিকে চলতি সালের মে মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, কোলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কি.মি.। দূরত্ব বিবেচনায় বন্দরের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও আরিচা ফেরিঘাটে যানজটের কারণে ব্যবসায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলতেন ব্যবসায়ীরা। তবে ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব কমেছে ৬২ কি.মি.। আর ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে ভোমরা স্থলবন্দরে। ব্যবসায়ীদের অভিমত,পদ্মা সেতুর ফলে পাল্টে গেছে ভোমরা স্থলবন্দরের দৃশ্যপট।
ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান জানান, কোলকাতা থেকে ভোমরার দূরত্ব কম। পদ্মা ব্রীজ হয়ে খুবই উপকার হয়েছে ব্যবসায়ীদের। মাত্র ৫ থেকে ৬ঘন্টায় ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা মালামাল দেশের যে কোন স্থানে পৌছে যাচ্ছে। সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের উর্দ্ধতন সহ-সভাপতি এহছান বাহার বুলবুল জানান,সিমেন্ট কারখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কারখানার মালামাল ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে যায়। ফেরীঘাটে জামের কারণে ২/৩দিন পর্যন্ত ট্রাক আটকে থাকত। উন্নয়ন হতো বাধাগ্রস্থ। এখন সে অবস্থা নেই।
এদিকে,পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সাতক্ষীরায় আমসহ পণ্য পরিবহনে সুবিধা এসেছে ব্যাপক। ফেরীর ভোগান্তি কমেছে বলে নিশ্চিন্তমনে আমসহ অন্যান্য পচনশীল পণ্য সারা দেশে পৌছে দিতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। পদ্মা সেতুর কারণে কৃষিজ পণ্য উৎপাদন ও ব্যবসায় যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজার কাচামাল ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে আমরা যখন আম পাঠাতাম,তখন অনেক সময় আম পচে যেত। ফেলে দিয়ে আসতাম অনেক সময়। এখন মাত্র চার থেকে পাঁচ ঘন্টায় আমরা ঢাকায় আম নিয়ে যেতে পারছি।
ঠিক-ঠাক ভোমরা বন্দর কাজে লাগানো গেলে চট্রগ্রামের সিপোর্টের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন স্থলবন্দরের কর্মকর্তারা।
এবিষয়ে ভোমরা স্থলবন্দর কতৃপক্ষের উপ-পরিচালক মামুন কবির তালুকদার জানান,আগে যেখানে প্রতিদিন ৩০০ট্রাক ঢুকত,এখন সেখানে ৪শ’ ট্রাক ঢুকছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ২৪ঘন্টার মধ্যে দেশের যেকোন জায়গায় পণ্য ঢুকে যাচ্ছে। আগামীতে যদি ওয়্যার হাউজ চালু হয়,তবে চট্রগ্রামের সিপোর্টের ওপর নির্ভরতা কমে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বেড়ে যাবে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাল্টে গেছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের দৃশ্যপট, পণ্য পরিবহনে খুলেছে নতুন দিগন্ত
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/