Site icon suprovatsatkhira.com

কালিগঞ্জের সামছুল উলুম মাদ্রাসা এÐ প্রি ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষার্থীকে বলাৎকার, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: এক মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর একটার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানাধীন পূর্ব নলতা সামছুল উলুম মাদ্রাসা (হাফিজিয়া) এÐ প্রি ক্যাডেট স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষককে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগে আটককৃত ওই মাদ্রাসার পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মেহেদী হাসান। তার বাড়ি কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গোয়ালডাঙা গ্রামে।
দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের এক ভ্যানচালক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জানান, একইসাথে হেফজো ও সাধারণ শিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে তার ছেলেকে কোড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে নিয়ে পাঁচ মাস আগে পূর্ব নলতা সামছুল উলুম মাদ্রাসা ও প্রিক্যাডেট স্কুলে ভর্তি করান তিনি। একইভাবে দুই মেয়েকে সেখানে ভর্তি করানো হয়। ছেলে মাদ্রাসার বোর্ডিং এ থাকলেও মেয়েরা বাড়ি থেকে প্রি ক্যাডেট স্কুলের গাড়িতে যাতায়ত করতো। তিন সন্তানকে পড়াশুনার জন্য তিনি মাসে প্রায় দুই হাজার টাকা দিতেন।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আরো জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তার ছেলে মাদ্রাসা থেকে মোবাইল ফোনে তাকে যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন দুপুর একটার দিকে দোতলার একটি কক্ষে ডেকে হুজুর (শিক্ষক) মেহেদী হাসান তাকে বলাৎকার করেছে। ১০/১২ দিন আগে পরপর দুই দিন তাকেড় বলাৎকারের অভিযোগ করে সে। বিষয়টি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয় মেহেদী হাসান। যে কারণে বিষয়টি বাড়িতে জানাতে সাহস পায়নি ছেলে। বিষয়টি জানার পর তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রফিকুল ইসলামসহ সকল শিক্ষকদের অবহিত করেন।

পরিচালনা কমিটি না থাকায় বিষয়টি তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা ঢাকায় অবস্থানকারি পীর কামেল সালমান হোসেনকে অবহিত করেন। কিন্তু পরিচালক পূর্ব নলতা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও শিক্ষক মৌতলা গ্রামের মনিরুল ইসলাম কৌশলে হুজুর মেহেদী হাসানকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এমনকি মেহেদী হাসানের নাম ছাড়া আরে কোন তথ্য তারা দিতে পারেননি। একপর্যায়ে তিনি বিষয়টি কালিগঞ্জ থানাকে অবহিত করেন। বুধবার রাত ১১টার দিকে উপপরিদর্শক হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশ এসে অভিযুক্ত মেহেদী হাসানকে না পারা, তার ঠিকানা সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে না পারা ও তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগে পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এরপর পরই কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি তাকেসহ ছেলেকে নিয়ে থানায় যান।

বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক মেহেদী হাসানকে পুলিশে সোপর্দ করার অঙ্গীকার করায় রাতে মামলা করা হয়নি। যথা সময়ে তাকে হাজির করাকে না পারলেও বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ওই দুই শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয়। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশ মত তাকে মেহেদী হাসানের নাম উল্লেখ করে মামলা দিতে বলা হয়। এ হেন পরিস্থিতিতে তিনি দুই মেয়ে ও ছেলেকে আর মাদ্রাসায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম জানান, সামছুল উলুম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি না থাকায় এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে বৃহষ্পতিবার সকালে তারা একটি আহবায়ক কমিটি গঠণ করেছেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষক মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই দুই শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিত ওই ছাত্রের বাবা বাদি হয়ে মেহেদী হাসানের নাম উল্লেখ করে বৃহষ্পতিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version