সুপ্রভাত ডেস্ক: নকশা অনুযায়ি সীমানা চিহ্নিত করে দুইপাড় জবরদখলমুক্ত করে যমুনা খননের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় আদি যমুনা বাঁচাও কমিটির উদ্যোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সদরের চৌরাস্তা মোড়ে এ কর্মসুচি পালিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন আদি যমুনা বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ অঅশেক -ই এলাহী, শ্যামনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু, বুড়িগোয়ালিনি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান ভবতোষ মÐল, শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি জিএম আকবর কবীর, ইউপি সদস্য দেলোয়ারা বেগম, গাজী ইমরান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কালিগঞ্জের ইছামতী নদীর সংযোগস্থল থেকে যমুনা খনন ছিল সময়ের দাবি। কয়েক বছর আগে কালিগঞ্জ থেকে কয়েক কিলোমিটার যমুনা খনন করা হলেও তা যথার্ত ছিল না। ফলে সাবেক মানচিত্র অনুযায়ি আবারো যমুনা খননের দাবি ওঠে। ওই দাবির সমর্থনে আবারো বরাদ্দ হওয়ায় নকশা অনুযায়ি দুপাড়ের অবৈধ জবরদখলদারদের উচ্ছেদ করে যমুনা খনন করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় একটি অসাধু চক্রের সাথে সমঝোতা করে যথাযথ মাপ জরিপ না করে ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে খনন কাজ শুরু করেন। একই সাথে তারা রেকডীয় জমিতে থাকা চÐিপুর মহাশ্মশানের লাশ ¯œান করানো বেদি ভেঙে দিয়েছেন। আর্থিক সুবিধা নিয়ে নকশার মধ্যে থাকা বৈঠকখানা, বাড়ি, কবরখোলা রেখে নদীর পরিবর্তে প্রস্থ ও গভীরতা কমিয়ে খাল হিসেবে খনন কাজ করা হচ্ছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র রক্ষা, উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গভীরভাবে খনন করে যমুনা নদীতে জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে যেভাবে যমুনা নদীর খনন কাজকে বিতর্কিত করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাওসহ বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবেন।
এদিকে মানববন্ধনে উপস্থিত থাকা চÐিপুর গ্রামের সহাদেব ঘোষ, আনন্দ ঘোষ, সুদেব সরকারসহ কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ এপ্রিল এস্কেবেটর মেশিন দিয়ে সাত গ্রামের হিন্দু মরদেহ সৎকারের একমাত্র মহাশ্মশানটির লাশ সৎকারের বেদিটি ভেঙে দেওয়া হয়।
ঠিকাদারেরর সহযোগী দেলোয়ার হোসেন নিজেই এ ভাঙার কাজে অংশ নেন। এরপর বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হলে এস্কবেটর মেশিন ফেলে রেখে চলে গণপিটুনি খেয়ে পালিয়ে যায় দেলোয়ার হোসেন। সেকশান অফিসার তন্ময় হালদারের দেখা মেলেনি দীর্ঘদিন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী ২৬ এপ্রিল ঘটনাস্থলে এসে শ্মশান ভাঙচুর ও খননকাজে অনিয়মের বিষয়টি নিশ্চিত হন। তার কাছে এক সপ্তাহের মধ্যে শ্মশান বেদী তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানালে আপত্তি করেন শ্মশান কমিটির সভাপতি পরিতোষ মÐল। পরিতোষ মÐল প্রথমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। পরে তিনিই সুবিধা নিয়ে ৮ মে রাতে দেলোয়ারের কাছে এস্কেবেটর মেশিন তুলে দেন। ফলে পরদিন ওই এলাকার এক নারী মারা যাওয়ার পর লাশ দূরবর্তী শ্মশানে নিয়ে দাফন করতে হয়েছে।
তবে পরিতোষ মÐল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সরকারি দলের লোক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও সরকারি কাজ করে যাচ্ছেন। যে কারণে তিনি সরকারকে বিপাকে ফেলতে না চাওয়ায় সুবিধামত সময়ে ঠিকাদার শ্মশান বেদী করে দিলে তার কোন আপত্তি নেই মর্মে উপসহকারি প্রকৌশলীকে জানিয়েছিলেন। কখন এস্কেবেটর মেশিন নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।