সমীর রায়,আশাশুনি : আশাশুনিতে শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙ্গন কবলিত বেড়ি বাঁধ নির্মাণ কাজে বøক তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
শ্রীউলা ইউনিয়নের ভাঙ্গন পয়েন্ট হাজরাখালী পাউরো’র বেড়ী বাঁধ বারবার ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়ে আসছে। ফলে এলাকার মানুষ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে। ঘরবাড়িসহ সর্বশ্ব হারিয়ে এলাকার মানুষ এখন দিশেহারা। এসব মানুষসহ এলাকার সার্বিক পরিবেশকে সুরক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক নির্দেশনায় টেঁকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে ঢাকার মেসার্স আমান ট্রেডার্স হাজরাখালীর বাঁধ সুরক্ষার ঠিকাদারী কাজ পেয়েছেন। ট্রেডার্সের এমডি মোস্তফা কামাল সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে এখানে কাজ পরিচালনা করছেন, আরিফ আহমেদ। ৪৫ কোটি টাকা (১০% কমে) ব্যয় বরাদ্দে ১১৬০ মিটার বাঁধে ডাম্পিং ও বøক স্থাপনের কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি বøক ৩৫ * ৩৫* ৩৫ সে.মি আকারের ৪ লক্ষাধিক বøক তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি’২৩ মাসে ওয়ার্ক ওয়াডার প্রাপ্ত হয়ে ২ বছর মেয়াদী কাজ পুরো দমে এগিয়ে চলেছে।
ইতিমধ্যে ২% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের শুরুতে ব্যবহৃত বালি ও পাথরের খোয়ার মান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সিলেকশান বালি বা ১.৫ এফএম বালি ব্যবহারের কথা থাকলেও সিলেকশান বালির সাথে এলাকার নিন্মমানের সাদা বালি ও লোনা বালি মিশিয়ে ব্যবহার করা এবং নিন্মমানের পাথরের খোয়া/চিপ ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। কাজের কোন তথ্য বোর্ডও প্রদর্শন করা হয়নি। ফলে এলাকার সচেন মহল কাজ সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে রাজু ঘোষকে কাজ দেখাশোনা করতে বলা হলেও তাকে পাওয়া যায়না বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। তাছাড়া কাজের মালামাল পরিবহনের সময় মাড়িয়ালা মৎস্য সেড থেকে হাজরাখালী ইটের সোলিংকৃত রাস্তা নষ্ট করা হচ্ছে। এতে রাস্তায় যাতয়াকারী সকল যানবাহন ও পথচারীরা খুবই সমস্যার পড়েছে। লোড যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা, অন্য যানবাহন দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। নিন্মমানের বালি অপসারন করে অনুমোদিত মানের বালির ব্যবহার নিশ্চিত করা ও উন্নতমানের চিপ/পাথরের খোয়া ব্যবহারসহ নিয়ম মত কাজ করানোর ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেম কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক দীপঙ্কর বাছাড় দীপ জানান, আমার শ্রীউলা ইউনিয়ন চিংড়ি চাষের উপযোগী হিসেবে পরিচিত। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ঠিক না থাকলে চিংড়ি চাষের ঘের ভেসে যাবে। অতীতে আমরা এভাবেই সর্বশান্ত হয়েছি। আমাদের ব্যক্তিগত কোন দাবি নেই, সিডিউল অনুযায়ী কাজ করাতে হবে। কোন অনিয়ম করতে দেওয়া হবে না। মালামাল বহনে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। ওয়াপদা কর্তৃপক্ষ রাস্তা ঠিক করে দেবেন বলেছেন। কিন্তু এখনো কোন কিছু করার লক্ষণ দেখতে পাইনি। তিনি রাস্তা সংস্কার করে মালাামল পরিবহনের জন্য দাবী জানান। তিনি বলেন, বাধের কাজের ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) এর সাথে কথা হয়েছে, তিনি সিডিউল মোতাবেক কাজ করিয়ে নিতে বলেছেন। কোন ত্রুটি মনে হলে তাকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। সাথে সাথে তিনি চেয়ারম্যান সাহেবের পক্ষে একজনকে কাজ দেকভাল করার জন্য নিয়োজিত রাখার অনুমতি দিয়েছেন।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি আরিফ আহমেদ বলেন, প্রথমে সামান্য কিছু মিশ্রিত বালি সরবরাহকারী এনেছিলেন। আমরা সাথে সাথে তাকে বাদ দিয়ে অন্যদের থেকে বালি নিচ্ছি। বালি সর্বাবস্থায় এফএম ১.৫ ব্যবহার করা হচ্ছে। চিপ/পাথরি খোয়ার মানও সিডিউল মত রয়েছে। সার্বিক ভাবে বøক নির্মানের কাজ উন্নতমানের ও সিডিউল মাফিক করা হচ্ছে।