নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথের বিরুদ্ধে আনা হয়রানী, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা-৩ এর অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম সরেজমিনে উপস্থিত থেকে এ তদন্ত সম্পন্ন করেন। এসময় বাদি বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের আনিত অভিযোগের বিষয় সম্মূহ লিপিবদ্ধ করেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা। গেল বছরের ২৪ নভেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বরাবর নানা অভিযোগ এনে লিখিত পত্র প্রেরণ করেন। পরে ১২ এপ্রিল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা-৩ এর অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল ইসলামের স্বাক্ষরিত ৪১. ০১. ০০০০. ০৪৯. ২৭. ০২৪. ২২. ৩৬৬ নং স্মারকে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সেই মোতাবেক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন তার পক্ষের প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ তদন্ত কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয় মৌখিক, লিখিত ও কাগজপত্র প্রদান করেন।
পরে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথকে আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় জেলার বিভিন্ন এলাকার স্বেচ্ছাসেবী ৮/১০ টি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা-৩ এর অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল ইসলামের নিকট লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন। উল্লেখ্য যে, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আহছানীয়া মিশন সহ ১০/১২ টি অসংখ্য সেচ্ছাসেবী ক্লাব ও প্রতিষ্ঠান, এতিমখানার কমিটি নবায়নের ক্ষেত্রে তার দপ্তরে বিড়ম্বনার ফেলে হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার অসংখ্য অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে অফিসের কর্মকর্তাদের অন্যত্র দুরে বদলি সহ নানা ভীতি দেখান তিনি। অধিনস্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাবা মা তুলে গালিগালাজ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যার প্রেক্ষিদে সাম্প্রতিক সাতক্ষীরা জেলার সমাজসেবার আওতাধীন কর্মকর্তা, কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মার্চ মাসের সভায় জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথের বিরুদ্ধে রেজুলেশনের মাধ্যমে একাধিক অভিযোগ ও অনাস্থা জানানো হয়েছে। উপস্থিত ভূক্তভোগীদের মধ্যে গনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের আব্দুর রউফ জানান, আমাদের সংগঠনের কমিটির মেয়াদ শেষ হলে আমরা জেলা সমাজসেবা দফতরে প্রেরণ করা হলে। দিনের পর দিন হয়রানি করে চলেছেন।
ভুক্তভোগী গৌরপদ দাস জানান, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন। দলিতদের জন্য আইন ও অধিকার নিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হলেও জেলা সমাজসেবা অফিসে কোন প্রকার সুবিধা প্রদান,কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয় না। এমনকি উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে গেলে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এদিকে, সাতক্ষীরা আহছানীয়া মিশনের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে একই নামে ভিন্ন ব্যাক্তিদের নামে কমিটি অনুমোদন দেওয়া অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে মিশন কর্তৃপক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন। উপ-পরিচালকের চেয়ারে বসে এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মিশন কর্মকর্তারা। সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা-৩ এর অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, তদন্তের বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট প্রদান করবেন। সবকিছু বিবেচনা পরবর্তী আইননুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।