কলারোয়া প্রতিনিধি : দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে কৃষকের একত্রিত করে রাখা এক বিঘা জমির ধান। ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাজার কষ্ট নিয়ে সেই পোড়া ধানের মধ্য থেকে কোনরকম ভালো ধানগুলো বের করে নেওয়ার চেষ্টা করছে কৃষক ইসরাইল হোসেন। ঝড় বৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এক বিঘা জমির ধান মাঠে তিন ভাগে একত্রিত করে জালি বা গাদা দিয়েছিল কৃষক ইসরাইল হোসেন কিন্তু রাতের আঁধারে তার সেই ধানে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (২৯ এপ্রিল) ভোররাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাকসা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দাকোপের বিলে ঘটনাটি ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষী ইসরাইল হোসেন ব্রজবাকসা গ্রামের কৃষক গোলাম হোসেনের ছেলে। ইসরাইল হোসেন কৃষি পেশার পাশাপাশি ব্রজবাকসা কাঁচা বাজারের ইজিতদার হিসেবে খাজনা আদায়ের কাজ করেন।
কৃষক ইসরাইল হোসেন বলেন, গত পরশু থেকে ঝড়-বৃষ্টির হওয়ার কারণে কাটা ধান গতকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত জমিতে জালি দিয়ে রেখে বাড়িতে যায় সকালে স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুন ফোন করে জানাই গাদা করা বা জালি দেওয়া সেই ধানে আগুন দিয়েছে কে বা কারা। এসে দেখি এক বিঘা জমির সেই বিচুলী সহ ধান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখনো জমিতে সেচের পানির ২৫০০ টাকা ও সার কীটনাশকের টাকা সব বাকি এর মাঝে এক বছরের পরিবারের খোরাকির ধান সব পুড়ে ছাই করে দিয়েছে কে বা কারা। মাঠের ডিপটয়েলের পাহারাদার জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ধানের জমিতে সেচ দেওয়া সিজেন শেষ হয়েছে গত ৫-৭ দিন হলো। আজ ভোর চারটার দিকে খবর পায় তিন জায়গায় একত্রিত করে রাখা ধান আগুনে জ্বলছে দ্রæত গিয়ে দেখি তার সম্পূর্ণ ধান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মাঠের গভীর নলকূপ ডিপটওয়েল পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ইসরাইলের এক বিঘা জমিতে প্রায় ১৫ বস্তা ধান হতো যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
আর গো-খাদ্যের জন্য বিচুলির দাম তো আরো অনেক বেশি। এক বিঘা জমির সেচে খরচ তিন হাজার টাকা সার কীটনাশক ও বীজ মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মজুরি খরচ সহ সব মিলিয়ে তার প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ব্রজবাকসা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুন বলেন, ইসরাইল হোসেন এর পারিবারিক আর্থিক অবস্থাও খারাপ। এই ধান তার পরিবারের আগামী এক বছরের খোরাক ছিল যা দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে তবে এর পেছনে যে বা যারাই জড়িত রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এবং যাতে এই হতদরিদ্র পরিবারটি ক্ষতিপূরণ পায় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হবে তবে অভিযোগ পেলে এর পেছনে কে বা কারা রয়েছে খতিয়ে দেখে ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষী যাতে ক্ষতিপূরণ পায় তার জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে। কলারোয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত-পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।