Site icon suprovatsatkhira.com

ঈদকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রে

মীর খায়রুল আলম : আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঈদুল ফিতর। আর তাই ঈদকে ঘিরে নানা প্রস্তুতির কাজ চলছে দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রে। দর্শানার্থীদের অপেক্ষায় প্রস্তুত করা হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্রটি। জেলা শহর হতে কয়েক কিলোমিটার দুরে দেবহাটা উপজেলার ইছামতি নদীর তীরে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হয় পর্যটন কেন্দ্রটি। প্রায় দেড় শত বিঘা জমিতে বিস্তৃর্ণ।

এই বনের বুক চিরে প্রায় ১০ একর জমিতে অনামিকা লেক, পিকনিক স্পট, শিশুপার্ক, কনফারেন্স রুম, বনের ভিতরে কংক্রিটের তৈরি ট্রেইল, সেলফি পয়েন্ট, প্যাডেল চালিত বোড, ইছমিতির পাড়ে বসে বৈকালীন, তিন নদীর মোহনা দেখার সু-ব্যবস্থা। এছাড়া নারী-পুরুষের জন্য আলাদা নামাজের স্থান, ওয়াশবøক, সুপেও পানির ব্যবস্থা ছাড়াও যোগ হয়েছে রাত্রিযাপনের জন্য কটেজ। নানামূখি বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা বনটিতে বর্তমানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলছে নান সাজসজ্জা ও নির্মান কাজ। জেলার সদর হতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে ইছামতি নদীর তীরে শিবনগর মৌজায় অবস্থিত বনটি “রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র” নামে পরিচিত।

ইছামতি নদীর তীরে কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি এ ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি এ উপজেলায় মানুষকে গর্বিত করে। উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টাউনশ্রীপুর এলাকায় ভারতের টাকি পৌরসভার বিপরীতে ইছামতি নদীর তীরে শীবনগর মৌজায় এ বনটি তৈরি করা হয়েছে। এই পর্যটন কেন্দ্রর সার্বিক উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সহযোগীতা প্রদান করা হয়েছে।

এই বনটিতে বহু প্রজাতির ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে। সুন্দরবনের আদলে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষের চারা এনে রোপণ করে ব্যাপক বনের সৃষ্টি করা হয়েছে। যার মধ্যে কেওড়া, বাইন, গোলপাতা, কাঁকড়া, নিম, সুন্দরী, হরকচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ উদ্ভিদ। বিনোদন প্রয়াসীদের জন্য রয়েছে বসাস্থান। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য কৃত্রিম বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এটি পরিপূর্ণ বনে পরিনত করতে উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে, সাতক্ষীরা জেলার ইছামতি সীমান্তের ইছামতির তীরে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দিত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য ম্যানগ্রোভ মিনি সুন্দরবনটির পরপর পরিধি বাড়ছে।

২০০৯ সালে দেবহাটার সুঁশিলগাতী এলাকার নদীর বেড়ি বাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হলে বাধ রক্ষায় ২০১০ সালে উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে বাধ রক্ষায় ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য তৈরি করা হয় ম্যানগ্রোভ বন। বেশ কয়েক বছর যেতে যেতে বনের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর রক্ষা পায় আশে পাশের এলাকাবাসীরা। প্রতিবছরে উপজেলার ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ উপভোগ করতে আসে প্রকৃতির এই দৃশ্য। তাছাড়া বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বনটিতে কানায় কানায় দর্শণার্থী পরিপূর্ণ হয়।

বর্তমান স্থানটিতে প্রবেশ করতে হলে উপজেলা প্রশাসনেকে টিকিটের মাধ্যমে ২০টাকা ফি দিতে হয়। যার পুরো টাকা সরকারি রাজস্ব তহবিলে জমা হয়। স্থানটি ইছামতির তীরে নিরিবিলি হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে সময় কাটাতে আসেন। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, ঈদকে ঘিরে দর্শানার্থীদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন প্রস্তুতির কাজ চলছে। সব বয়সী মানুষের কথা বিবেচনা করে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি দর্শানার্থীদের মত করে সাজানো হচ্ছে। আমি অনুরোধ করব যারা ঈদে ছুটিতে বাড়িতে ফিরবেন অর্ন্তত একবার হলেও দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি ঘুরে যাবেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version