শ্যামনগর, সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া এই ঝড়ে ধ্বসে গেছে প্রায় শ’খানেক কাঁচা ঘরবাড়ি। আধাপাকা বাড়িগুলোর টিনের চাল উড়ে গেছে। ঝড়ে কেউ হতাহত না হলেও রুহুল কুদ্দুস নামের এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমান এখনও জানা যায়নি।
আকস্মিক আরম্ভ হওয়া এই ঝড়টি শ্যামনগরের রমজাননগর, কৈখালি ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রখর রোদ ছিলো। হঠাৎ করে চারদিক অন্ধকার হয়ে ঝড় আরম্ভ হয়। আধাঘন্ডা ধরে ঝড়ের তান্ডব এতই বেশী ছিলো যে, কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ির দেওয়াল ধ্বসে গেছে। এছাড়া গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রমজাননগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের কালিঞ্চী, মধ্যপাড়া, গেটপাড়া, কলোনিপাড়া ও খাসখামার সহ কয়েকটি গ্রামে ৫০টির মত কাঁচা ঘরের দেওয়াল ধ্বসে সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া বৃষ্টিসাথে শিলা পড়ে ক্ষেতের ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। এদের মধ্যে আলী আজগার বুলু, মোস্তাফিজুর গাজী, জাহিদ গাজী, নূর ইসলাম, গোলাম কাগুচী, নূর মোহাম্মদ, অবনী মÐল, অলিউল্লাহ গাজী, মুজিবর গাজী, রেজাউল গাজী, খোকন কাগুচী, রহিম কাগুচী, শফিকুল গাজী ও হযরত আলী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা জানান, তার ইউনিয়নের টেংরাখালি, পারশেখালী সহ কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ১৫-২০টি মত ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এছাড়া কিছু ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
কৈখালি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বৈশখালি, পশ্চিম কৈখালি ও কাঠামারি এলাকার ৩০টির মতো অস্থায়ী ঘরবাড়ি ঝড়ে উড়ে গেছে। এছাড়া পূর্ব কৈখালি গ্রামের সাহেব আলী, বিষে গাজী, শাহীন আলম, আফছার আলী, আইয়ুব আলী, রফিকুল ইসলাম, সলেমান গাজী, অব্দুল গাজী, ছিদ্দিক গাজী, জয়নাল গাজী, কালাম গাজী, ফজলু গাজীসহ কমপক্ষে ২৫টি কাঁচা পাকা বাড়ি ধ্বসে পড়েছে। পূর্ব কৈখালি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রুহুল কুদ্দুস নামের এক জেলে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি ঝড়ের সময় নদীতে মাছ ধরছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সে ঝড়ের সময় নৌকা ডুবে মারা গেছে।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, আকস্মিক শুরু হওয়া ঝড়টি কালবৈশাখী। এধরনের ঝড় হঠাৎ করে আরম্ভ হয় আবার থেমে যায়। এসব ঝড়ের তীব্রতা অনেক বেশী থাকে। তবে খুব বেশী ক্ষতি করার আগেই এ ধরনের ঝড় নিঃশেষ হয়ে যায়।
শ্যামনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম জানান, ঝড়ে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এই মুহুর্তে জরিপ করা যায়নি। শুক্রবার এর পরিসংখ্যান দেওয়া যাবে।