মার্চ ১৮, ২০২৩
শ্যামনগরে সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে মায়ের জবানবন্দি
নিজস্ব প্রতিনিধি: অভাবের তাড়নায় ৫ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্র রোহিত দত্তকে জুসের সঙ্গে বিষ ও ঘুমের বড়ি মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত মা সুমিতা দত্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলাম তার খাস কামরায় এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। গ্রেপ্তারকৃত সুমিতা দত্ত (৩৩) সাতক্ষীরার শ্যামনগর পৌরসভার হরিতলা গ্রামের মৃত গোপাল দত্তের স্ত্রী। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক খবির হোসেন শনিবার আদালতে সুমিতার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর সুমিতা তার একমাত্র সন্তান নকিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র রোহিত দত্তকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী কলেজ শিক্ষক মনোরঞ্জন রায় এর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা বাজারের কসমেটিকস ব্যবসায়ি পবিত্র রায় এর কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা সুদে খাটাতেন সুমিতা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সুদে টাকা খাটাতেন সুমিতা। বুধবার সুমিতা মৌতলা বাজারে পবিত্র এর কাছে টাকা আনতে গেলে সে টাকা দিতে পারবে না বলে তাড়িয়ে যায়। এ ছাড়া আরো কয়েকটি জায়গা থেকে তিনি টাকা আদায় করতে পার ছিলেন না। ফলে ছেলের পড়াশুনা খরচ, ঘরভাড়া ও সংসার চালানোর খরচ কোথা থেকে যোগাড় করবেন বলে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। একপর্যায়ে শুক্রবার দুপুরে ম্যাংগো জুসের সঙ্গে ২৬টি ঘুমের বড়ি (রিভোট্রিল.৫) ও কীটনাশক অটোমিডা মিশিয়ে রোহিতকে পান করান। এতে রোহিত মারা যায়। সুমিতার বাড়ি থেকে ঘুমের বড়ির স্ট্রিপ, কীটনাশকের পাতা ও একটি জুসের পাত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই নিহতের চাচা উজ্জ্বল দত্ত বাদি হয়ে সুমিতা দত্তের নাম উলে-খসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো জানান, সুমিতা শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলামের কাছে অভাবের তাড়নায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ছেলে রোহিতকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে শনিবার বিকেল তিনটায় ময়না তদন্ত শেষে রোহিতের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। 8,574,259 total views, 2,029 views today |
|
|
|