মার্চ ১৭, ২০২৩
শ্যামনগরে জুস খেয়ে স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু
গাজী আল ইমরান, শ্যামনগর ব্যুরো : সাতক্ষীরা শ্যামনগরে জাতীয় শিশু দিবস পালন করে বাসায় এসে রহিত দত্ত (১২) এর মৃত্যু হয়েছে এমনটাই অভিযোগ রহিতের মা সুস্মিতা দত্তের, এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ তার মায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ মার্চ শুক্রবার আনুমানিক বেলা দেড়টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর (হরিতলা) গ্রামে। মৃত রহিত ৭৫ নং নকিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র। সে শ্যামনগর উপজেলা নকিপুর (হরিতলা) গ্রমের মৃত গোপাল দত্ত এক মাত্র পুত্র। সূত্রমতে জানা যায় রহিতের বাবা ৪ বছর আগে স্টোক জনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন। ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু রহিতের মা সুস্মিতা দত্তকে থানায় নিয়েছে শ্যামনগর থানা পুলিশ। রহিত এর কাকা উজ্জল দত্ত জানায় শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে রহিতের মা ছেলের অসুস্থতার বিষয়টি মুটোফোনে পরিবারের সদস্যদের জানায়। এসময় দ্রæত বাড়িতে গেলে রহিতের মা বলেন বঙ্গবন্ধুর জম্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিনে আনা জুস খেয়ে ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠে শরীর নিস্তেজ হতে শুরু করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ নন্দী জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় রহিতের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করলে তারা পুলিশেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। এসময় ঘরের পাশে ড্রেন থেকে একটি বিষের প্যাকেট উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন পরকীয়ায় জড়িয়ে বিশেষ কোন কারনে রহিতকে তার মা হত্যা করে থাকতে পারে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থানকালে রহিতের মা বলেন, স্কুল থেকে আমার ছেলে বাসায় এসে বলে মা আমাকে এক কাকু জুস খেতে দিয়েছে তারপর থেকে আমার পেটের ভীতর ব্যাথা করছে, বমি আসছে। তখন তার মা তাকে জিজ্ঞাসা করে তুমি কি চেনো তাকে? তখন রহিত বলে না মা আমি চিনি না। তারপর আমি তাকে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াইয়ে শুয়াইয়ে গোসল করিয়ে বেড়ে শুইয়ে দিলে সে বমি শুরু করে। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠলে আত্বীয় স্বজনকে খবর দিয়ে ছেলেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। একপর্যায়ে তার মা বলেন, আমি ২টি জুস কিনে এনেছি কিন্তু ছেলের পেট ব্যাথা করায় স্যালাইন খেতে দিয়েছি। ৭৫ নং নকিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রহিতকে আমি স্কুলে আসতে দেখিনি। প্রিতম দত্ত বলেন, রহিত আমার কাকার ছেলে আমি আজ স্কুলে গেলেও সে আজ স্কুলে যায়নি, আমি আর ও একই ক্লাসে পড়ি। তবে স্থানীয় দোকানী বলেছেন,রহিত এর মাতা আমার দোকান থেকে দুটি জুস কিনেছে বেলা সাড়ে ১১ টায় দিকে। শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্য রত চিকিৎসক ফারজানা হক বলেন, বেলা দেড়টার সময় হসপিটালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে কোন রকম মারাত্মক বিশক্ত কিছু পাওয়া পড়েছে। পোস্টমর্টেম করলে সব কিছু জানা যাবে। শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মাকে থানায় ডেকে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিতের মা ইদুর মারার জন্য বাসায় বিষ রাখার কথা জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । 8,412,807 total views, 960 views today |
|
|
|