নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির বড়দল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে উপ নির্বাচনে প্রসেনজিৎ সরদারকে বেসরকারভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। ভোট চলাকালে মাঝ পথে অনিয়ম, দুর্নীতি, ভোট দানে বাধা ও মারপিটের অভিযোগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোট বয়কট করেন। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বামনডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (অস্থায়ী) এ ভোট গ্রহণ করা হয়।
১নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত মেম্বারের মৃত্যর কারণে মেম্বার (সাধারণ) পদে উপ নির্বাচনে দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। প্রসেনজিৎ সরদার মোরগ প্রতীক ও সুরঞ্জন কুমার মন্ডল ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামেন। সকাল ৮.৩০ টায় ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকে ভালভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও মাঝপথে প্রার্থী সুরঞ্জন কুমার মন্ডল তাকে সমর্থনকারী কোন কোন ভোটারদের ভোটদানের সময় ইভিএম ব্যবহার সঠিকভাবে না জানার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভিন্ন প্রতীকে দেওয়া ও ভোট নষ্ট করা হচ্ছে, তার ভোটারদের উপর এমনকি প্রার্থীকে কেন্দ্রে যেতে প্রতিবন্ধকতাসহ মারপিট করে আহত করা, ওয়ার্ডে পূর্ব থেকে কেন্দ্র থাকা স্কুলের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় আরও একটি স্কুল থাকা স্বত্বেও বাড়ির মধ্যে (যেখানে প্রফুল্ল সরদারের পোল্ট্রী ফার্ম ছিল) ভোট কেন্দ্র স্থাপন করাসহ নানা অভিযোগ এনে প্রার্থী সুরঞ্জন কুমার মন্ডল বেলা ১.৩০ টার পরে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে নিয়ে ভোট বর্জন করে কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। তবে ভোট গ্রহণ অব্যাহত থাকে এবং নির্দ্ধারিত সময় পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণ শেষে কর্তৃপক্ষ ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে দেখা যায় কেন্দ্রে ১৭১৪ জন ভোটারের মধ্যে ৯৪৭ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন। যার মধ্যে প্রার্থী প্রসেনজিৎ সরদার (মোরগ প্রতীক) ৬৪৪ ভোট পাওয়ায় তাকে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ভোট বয়কট ঘোষনাকারী প্রার্থী সুরঞ্জন কুমার মন্ডল (ফুটবল প্রতীক) পেয়েছেন ৩০৩ ভোট।
বেলা দু’টার দিকে ভোট বর্জনকারী প্রার্থী সুরঞ্জন, তার এজেন্টরা ও শত শত সমর্থক নড়েরাবাদ চাম্পাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ মুখর হয়ে মানববন্ধন ও ভোট গ্রহণ স্থগিত করে ভোট বাতিলের দাবী জানান। এসময় অরুনা দাশী (৭৫), কলেজ ছাত্র মহিতোষ, কনিকা রানী, সুভেন্দু মন্ডল, কনক মন্ডলসহ ১৫/২০ জন আহতরা ক্রন্দনরত অবস্থায় তাদের উপর হামলার বিচার প্রার্থনা করেন। এজেন্ট স্বদেশ কুমার মন্ডল ও প্রার্থী সুরঞ্জনসহ এজেন্ট ও সমর্থকরা জানান, তাদের ভোটারদের ইচ্ছেমত ভোট দিতে দেওয়া হয়নি, ভোট সুষ্ঠু হয়নি, বাড়িতে কেন্দ্র করা হয়েছে, ভোটারদের ব্যাপক মারপিট করে আহত করা হয়েছে। ভীত হয়ে ভোটাররা বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষকে ভোট বয়কটের কথা জানিয়ে চলে এসেছেন।
এব্যাপারে রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাচন অফিসার অনুজ গাইন জানান, ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের মধ্যে কোনরকম অনিয়ম ও সমস্যা হয়নি। প্রিজাইটিং অফিসার আক্তার ফারুক বিল্লাহ জানান, কেন্দ্রের মধ্যে কোন অনিয়ম ও মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। বেলা দেড়টার পরে প্রার্থী সুরঞ্জনের এজেন্টরা বেরিয়ে যায়, তখন ৩৮-৪২% ভোট গ্রহণ হয়। কেন্দ্রে ৫০% অধিক ভোট কাস্ট হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) দীপারানী সরকার বলেন, কোন অনিয়ম হয়নি, ভোট কেন্দ্র স্কুলের ক্লাস বসে এমন ঘরেই করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মমিনুল ইসলাম জানান, সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ কাউকে মারপিট করেছে এ অভিযোগ মিথ্যা। সকলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সহযোগিতাদানের মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ রাখতে চেষ্টা করা হয়েছে।