জানুয়ারি ৩, ২০২৩
দুদক’র তদন্ত প্রভাবিত করতে তৎপর ইউপি চেয়ারম্যানের বাহিনী: বাদী ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত
নিজস্ব প্রতিনিধি: কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন এর বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত প্রভাবিত করতে অভিযোগকারী ও সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে তাদের উপর চড়াও হয়েছে চেয়ারম্যানের পোষা ক্যাডার বাহিনী। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে দুদক’র নির্দেশে কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করতে গেলে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ও মন্দিরের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে। অবরুদ্ধ হওয়া সাংবাদিক হাফিজুর রহমান, হাবিবুল্যাহ বাহার, মাসুদ পারভেজ ক্যাপ্টেনসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর আহমেদ সুরুজ ও মহিউদ্দীন মেহের জানান, পূর্ব থেকে নির্দ্ধারিত ৩ জানুয়ারীর তদন্ত কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠুভাবে না হয় সেজন্য সকাল থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের নেতৃত্বে চৌকিদার রমজান আলী, শাহীন, খায়রুলসহ তার পোষা অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত¡রে অবস্থান নেয়। সকাল ১০টার দিকে তদন্তের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দীন ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছানো মাত্র তার পোষা বাহিনী মারমুখী হয়ে অভিযোগকারী নূর আহম্মেদ সুরুজ ও মহিউদ্দিন মেহেরসহ তার লোকজনকে হুমকি দিতে থাকে। এসময় বাদীরা তাদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান। কিন্তু তিনি অজ্ঞাত কারণে সেটা অগ্রাহ্য করে অভিযোগকারীদের ছাড়াই চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন ও তার ক্যাডার বাহিনীকে সাথে নিয়ে প্রকল্পগুলো আংশিক তদন্ত করে চলে যান। বেলা ১২ টার দিকে অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীরা তদন্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে বক্তব্য প্রদানের সময় কৃষ্ণনগর বাজার সংলগ্ন মন্দিরের সামনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিন এর নির্দেশে তার পোষা সন্ত্রাসী কালিকাপুর গ্রামের শাহীন মোড়ল, শংকরপুর গ্রামের সিরাজুল গাজী, রফিকুল ইসলাম, চেয়ারম্যানের চাচাত ভাই কৃষ্ণনগর গ্রামের আমিনুর রহমান, রঘুনাথপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, চৌকিদার ও চেয়ারম্যানের বডিগার্ড রমজান আলী, চৌকিদার শাহিন, চৌকিদার খায়রুল, কৃষ্ণনগর গ্রামের নুর ইসলাম, ডাটা বাবু, লিটন, মানপুর গ্রামের পশু ডাক্তার সুশান্ত, রামনগর গ্রামের বাসার, কালিকাপুর গ্রামের চাঁদাবাজ গ্রæপের সদস্য রেজাউলসহ ৩০/৪০ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে বাদী নূর আহম্মেদ সুরুজ, মহিউদ্দিন মেহের, ওলামা লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তারসহ সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের বিরুদ্ধে কেন দুদকে অভিযোগ করা হয়েছে এবং পত্রিকায় নিউজ করা হয়েছে সে ব্যাপারে কৈফিয়ত চাইতে চাইতে তারা বাদী ও দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করে। পরবর্তীতে কৃষ্ণনগর বাজারে অবস্থিত দীপকের সেলুনের দোকানের মধ্যে অভিযোগকারী মহিউদ্দিনকে বেধড় পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে জানার জন্য বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়াসিম উদ্দিনের কার্যালয়ে গেলে তিনি বলেন, তদন্ত চলমান আছে। সুষ্ঠুভাবে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়া হবে। তবে তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। তদন্তকালে অভিযোগকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে অবগত নই। দুদক চেয়ারম্যান অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তের জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলাতানা বুশরা সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দীনকে নির্দেশ দিয়েছেন। 8,578,921 total views, 6,691 views today |
|
|
|