জি এম মাছুম বিল্লাহ, সুন্দরবনাঞ্চল প্রতিনিধি : বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে হরিণ শিকারিরা। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ফাঁদ পেতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র নিধনে নেমেছে কয়েকটি চক্র। জানা গেছে, বিস্বস্ততা অর্জনে সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করে বন সংলগ্ন নিরাপদ জায়গায় ক্রেতাদের সামনেই জবাই করে বিক্রি করা হচ্ছে হরিণের মাংস। এছাড়া অভিনব কায়দায় প্রশাসনের নজর এড়াতে উপক‚ল এলাকা থেকে হরিণের মাংস রান্না করেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। তথ্যানুসন্ধানে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করলেও কিছু অসাধু ব্যক্তিদের কারণে সুন্দরবনের প্রাণী জীববৈচিত্র আজ বিলুপ্তির পথে।
সূত্র জানায়, বনবিভাগের সদস্যরা হরিণ শিকারিদের ধরতে অভিযানে যাওয়ার আগেই খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে যায় হরিণ শিকারিরা। সম্প্রতি বন বিভাগের অভিযানে হাতে নাতে কয়েকটি পাচারকারীসহ চোরাকারবারীদের যানবাহন আটক করলেও আইনের ফাঁক-ফোকড় দিয়ে বের হয়ে এসে আবারও নেমে পড়ে হরিণ শিকারে। বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী বনবিভাগের কাছে হরিণ শিকারিদের ৪ স্টেশনে ১০৮ জনের একটা তালিকাও রয়েছে। তার মধ্যে কোবাদক স্টেশনে ৩০ জন, বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে ৪২ জন, কদমতলা স্টেশনে ২০ জন, কৈখালী স্টেশনে ১৬ জন। তালিকা ছাড়াও আরো অনেকে হরিণ শিকারের সাথে জড়িত রয়েছে বলেও জানা গেছে। জানা গেছে, বর্তমানে চোরাকারবারীরা হরিণ শিকার করে মাংস পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৪ স্টেশনের আওয়াতাধীন কোবাদকের গোলখালি, ঘড়িলাল, গাবুরা, নাপিত খালি, বুড়িগোলিনীর স্টেশনের গাবুরার ৯নং সোরা, ডুমুরিয়া, ১৪ রশি দাতিনাখালির মহসিন সাহেবের হুলা ও চেয়ারম্যান মোড়, কদমতলার স্টেশনের মুন্সীগঞ্জ মৌখালী, সরদার বাড়ি, হরিনগর বাজার ও চুনকুড়ি, কৈখালী স্টেশনের পাশ্বেখালি, টেংরা খালি, কালিঞ্চি, ভেটখালি ও কৈখালীসহ সুবিধা-মত অনেক রুট ব্যবহার করে থাকে। এসব বিষয়ে পরিবেশবিদ মোহন কুমার মন্ডল বলেন, প্রতিনিয়ত হরিণ শিকারের কারণে সুন্দরবনের প্রাণী বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
অচিরেই যদি হরিণ শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা যায় তাহলে প্রাণী শূন্য হবে সুন্দরবন। বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম কে এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরি বলেন, আমরা সব সময় সজাগ আছি। বিশেষ করে হরিণ শিকারিদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। সঠিক তথ্য পেলে তাদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েকটা হরিণ শিকারিকে আটক করে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।