নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল সরকার ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছেন কোটিপতি। বর্তমানে তিনি উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন। নন্দলাল উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের গৌর চন্দ্র সরকারের ছেলে। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল সরকারের আপাদমস্তক পর্যন্ত দূর্নীতে ভরা। টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেননা তিনি। ঘুষ বাণিজ্য করে তিনি হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক।
তার রয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের আলিশান বাড়ি, মার্কেট,জমি, ব্যাংক -ব্যালেন্স ও অঢেল সম্পত্তি।
অনুসন্ধানে জানাযায়,উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের চন্ডিতলা মোড়ে গত ৫ বছর আগে ৯ লক্ষ টাকা দিয়ে ১০ শতক জমি ক্রয় করেন তিনি। পরবর্তীতে গত দুই বছর আগে আনুমানিক ৭০ লক্ষ টাকার অধিক খরচ করে সেখানে ৫ তলা ফাউন্ডেশনের একটি মার্কেট গড়ে তুলেছেন। এছাড়া তার রয়েছে কোটি টাকার আলীশান বাড়ি।
চাকরি কালীন সময়ে তার নিজ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ১০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনাতলা গ্রামের অনেকে জানান,নন্দলালের বাবা ছিলেন একজন গরীব দিন মজুর। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো। নন্দলালের ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৩ ভাই বর্তমানে দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে।
ভূমি অফিসে চাকরি করার সুবাদে নন্দলাল কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন। অঢেল টাকা পয়সা ও সম্পতির মালিক হওয়ার কারণে বিস্মিত এলাকাবাসী। অবৈধ টাকা বৈধ করতে নন্দলালের বড় ছেলে গৌতম সরকার সোনাকে কুয়েত পাঠিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ২ বছর রেখে দেশে ফিরেয়ে আনা হয়। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে কুয়েতের ভিসা নিয়ে সেখানে পাড়ি জমায় গৌতম। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নাগরিক নন্দলালের ছেলে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী। উল্লেখ্য,উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে । সেসময় কুশুলিয়া ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলী করেন উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ।
পরবর্তীতে গত ৮ মাস আগে সেখান থেকে বদলী হয়ে আসেন বসন্তপুর ভূমি অফিসে। যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির চাদরে অফিসটি মুড়িয়ে রেখেছেন নন্দলাল সরকার।
জমির নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত কোন কাজ করতে গেলে ঘুষ দিতে হয় তাকে। পূর্বের কয়েকটি কর্মস্থলে একবছর চাকরি করার পর ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগে তিনি বদলী হন।
কুশুলিয়া ভূমি অফিসেও দুর্নীতির অভিযোগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। এতো দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে নন্দলাল। এসকল বিষয়ে জানতে চাইলে বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নন্দলাল সরকার বলেন, তার ছেলে কুয়েতে ছিলো তার পাঠানো টাকা দিয়ে বাড়ি ও মার্কেট তৈরি করেছেন। জমি-ক্রয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
অবিলম্বে এই ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।