কলারোয়া প্রতিনিধি : কুমড়ো ফুলে নুয়ে পড়েছে লতাটা, আর সজনে ডাঁটায় ভরে গেছে গাছটা, আর আমি ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি। খোকা তুই কবে আসবি? কবে ছুটি?’ কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তার এই কবিতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিলেন একজন ভাষা শহীদের মায়ের আকুতি। কুমড়ো ফুল, সজনে ডাঁটা, ডালের বড়ি আবহমান বাংলার ঐতিহ্য। আর এ ঐতিহ্য মনে করিয়ে দেয় ভাষার কথা, দেশের প্রতি মমত্ববোধের কথা। অপরদিকে, অযতœ আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা সজনে সবার কাছেই খাদ্য হিসেবে বেশ প্রিয়। এখন সজনে গাছে ফুল আসার মৌসুম। সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার সামনে ও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সজনের সাদা ফুলে ছেয়ে গেছে ।
রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায়, পুকুর পাড়ে লাগানো গাছে গাছে ক’দিন পরেই বাতাসে দোল খাবে সজনে। প্রত্যন্ত অঞ্চলজুড়ে যা মানুষের অতি প্রিয় খাবার। সজনে চাষী আ:হান্নান বলেন ‘এখন অবশ্য অনেকে বাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষ করে হাট-বাজারে বিক্রি করেন। প্রথমদিকে দামটা একটু বেশি থাকলেও পরে কমতে শুরু করে। ’শুধু গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছেই নয়, শহরের মানুষের কাছেও সজনে ডাঁটার ব্যাপক কদর রয়েছে। তাছাড গ্রাম বাংলার সর্বত্র সজনে, সজনের পাতা ও ফুল নি:সন্দেহে একটি পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার।
সজনে গাছের ছাল ও পাতা ঔষধি হিসেবে ব্যবহারও বহুল পরিচিত। বিনা পরিশ্রমে শুধু একটি ডাল সংগ্রহ কওে বাড়ির আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে লাগিয়ে রাখলেই কিছু দিনের মধ্যেই গাছ বড় হয়ে যায়। দেখতেও সজনে গাছ খুবই দৃষ্টিনন্দন। সজনে গাছের অতুলনীয় গুণ বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভার সব অঞ্চলে শত শত সজনে ডাল রোপণ করে নিজ বসতবাড়িতে। এদিকে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবেও সজনে চাষ শুরু হয়েছে। সজনের দাম ভাল পাওয়ায় এখন অনেকে সজনের ডাল কেটে বাড়ীর আশে পাশে পতিত জমিতে লাগানোর প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: শফিকুল ইসলাম বলেন, সজিনা মানবদেহের জন্য খুব উপকারী একটি সবজি। এতে শরীরের চর্মরোগ নিয়ন্ত্রণ করে।